ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা চেয়ে ইসিতে চিঠি

আগামী সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পর্কে আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে চিঠিতে।
গত সোমবার (২১ জুলাই) এই চিঠি পাঠানো হয়। তবে, আজ চিঠির বিষয়ে ইসি থেকে জানানো হয়েছে।
আজ বুধবার (২৩ জুলাই) ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, সবকিছু সম্ভব, কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি এটার জন্য মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমার জায়গাটা বাস্তবায়নের। সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে কমিশন। এ ছাড়া কমিশন যদি মনে করে সচিবালয়ের মতামত প্রয়োজন তাহলে সচিবালয়ের মুখপাত্র হিসেবে কমিশনে আমার মতামতটা দিতে পারি।
সচিব বলেন, এত তাড়াতাড়ি বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়। একটু সময় লাগবে। কমিশন যদি এ বিষয়ে জানতে চায়, তাহলে আমি এটার প্রস্তুতি নিয়ে কমিশনকে বলতে পারি। আর কমিশন যদি মনে করে এটা করতে হবে তাহলে করবে। তখন এটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমার।
চিঠি সূত্রে জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ১১তম সভা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর (অব.) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কার্যবিবরণীতে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক গৃহীত কার্যক্রম আগামী ৩ আগস্টের মধ্যে ই-মেইলের মাধ্যমে সফটকপি এবং হার্ডকপি সরাসরি জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক-২ শাখায় পাঠাতে বলা হয়েছে।
ওই সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এতে বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঝুঁকিপূর্ণ সকল ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও কার্যকর মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থার সমন্বয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন; মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ওসিদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে; ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। একইসঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীতে সদস্য নিয়োগ ও পাসিং আউট কার্যক্রমও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে।
এ ছাড়া সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক দুটি পৃথক প্রস্তুতিমূলক মহড়া পরিচালনা করার পরিকল্পনা; জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে, সেজন্য নজরদারি জোরদার করতে হবে। নির্বাচনের পূর্বে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা থেকে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনপূর্ব এবং নির্বাচনকালীন সকল সংস্থাকে একত্রে নিরপেক্ষভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে বলে এতে উল্লেখ রয়েছে।
এর আগে গত ৯ জুলাই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে নির্বাচনের জন্য বিভিন্ন রকমের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এরপরই এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানা যায়।