মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা : গ্রেপ্তার ৪ জন রিমান্ডে

মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চারজনকে চার দিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান এ আদেশ দেন।
এদিন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে আসামিদের হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের এন্টি-টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক কে এম তারিকুল ইসলাম। শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন।
আসামিপেক্ষর আইনজীবী এমদাদুল হক বিজয় বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন—নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, জাহেদ আহমেদ ও মাহফুজ।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ৩৫ প্রবাসীর বিরুদ্ধে ঢাকার বিমানবন্দর থানায় এন্টি-টেরোরিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে গত ৫ জুলাই মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, জাহেদ আহমেদ, পারভেজ মাহমুদ পাবেল, শরীফ উদ্দিন, রহমান মোহাম্মদ হাবিবুর, সালেহ আহমেদ, মো. আব্দুস সহিদ মিয়া, মো. মতিন, ফয়সাল আলম, রায়হান আহমেদ, মো. রাজ, মো. মনসুরুল হক, ইমন মহিদুজ্জামান, আকরাম মো. ওয়াসিম, শেখ সালাম, মোহাম্মদ রাজ মাহমুদ মন্ডল, আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন, মাহফুজ, রবিউল হাসান, মোহাম্মদ সোহেল রানা, মো. আফসার ভূইয়া, হোসাইন সাহেদ, মো. আশিকুর বিশ্বাস, মো. শাওন শেখ, ইয়াসিন আলী, মোহাম্মদ পারভেজ মোশারফ, মহিউদ্দিন, সাব্বির হোসাইন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. শাকিল মিয়া, আসাদুজ্জামান হোসাইন ও মো. সোহাগ রানা।
এর আগে, গত ৩০ জুন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুওন ইসমাইল বলেন, গত ২৪ এপ্রিল পরিকল্পিত একটি অভিযানের অংশ হিসেবে সেলেনগর ও যোহর অঞ্চল থেকে তিন ধাপে এই বাংলাদেশিদের আটক করা হয়।
এক বিবৃতিতে দাতুক সাইফুদ্দিন আরও বলেন, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী তৎপরতায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ছাড়া ১৫ জনকে মালয়েশিয়া থেকে বের করে দেওয়ার আদেশ জারি হয়েছে এবং বাকি ১৬ জনের বিরুদ্ধে জঙ্গি আন্দোলনে সম্পৃক্ততার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
দাতুক সাইফুদ্দিন জানান, মালয়েশিয়া পুলিশের বিশেষ বিভাগ তাদের তদন্তে উদঘাটন করেছে, এই গ্রুপটি দেশটিতে আইএসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের নিজেদের সম্প্রদায়ের মধ্যে জঙ্গি নিয়োগ সেল গঠন করেছিল। এই সেলগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মৌলবাদী বিশ্বাসকে ছড়িয়ে দেওয়া, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তহবিল সংগ্রহ করা এবং তাদের নিজেদের দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাত করার জন্য।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশের তৎপরতার প্রশংসা করে বলেন, তাদের দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের কারণে জননিরাপত্তা নিশ্চিতে এই অভিযান সফল হয়েছে।
দাতুক সাইফুদ্দিন আরও বলেন, মালয়েশিয়াকে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও সন্ত্রাসীদের হুমকি থেকে মুক্ত রাখতে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।