বিয়ের চাপ দেওয়ায় নিজের বিশেষ অঙ্গ কেটে ফেললেন যুবক

পাবনার বেড়া উপজেলায় পরিবার থেকে বিয়ের চাপ সহ্য করতে না পেরে নাজমুল (২২) নামের এক যুবক ক্ষোভে নিজেই নিজের পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষ কেটে ফেলেছেন। বর্তমানে তিনি পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত ২৬ জুন পাবনার বেড়া উপজেলার কৈটোলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মানিকনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও গতকাল শনিবার (৫ জুলাই) বিষয়টি সামনে এসেছে। নাজমুল ওই গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন এস্কেভেটর চালক। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নাজমুলের তিন বোনের মধ্যে বড় বোনের বিয়ে হয়ে গেছে এবং ছোট দুই বোন অবিবাহিত। পরিবার থেকে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল, তবে তিনি তাতে রাজি ছিলেন না। ঘটনার দিন পরিবারের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নাজমুল বাজার থেকে ব্লেড কিনে এনে বাথরুমে গিয়ে নিজের পুরুষাঙ্গ ও অন্ডকোষ কেটে ফেলে দেয়। তার চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সময়মতো চিকিৎসা না পাওয়ায় বিচ্ছিন্ন অঙ্গ পুনঃস্থাপন সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, নাজমুলকে তার মা, নানা ও দুলাভাই প্রায়ই বিয়ের জন্য চাপ দিতেন। কেউ তাকে ‘হিজড়া’ বলে কটাক্ষ করায় ক্ষোভে তিনি এমন কাজ করতে পারে বলেও সন্দেহ করছেন স্থানীয়রা।
কৈটোলা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রফিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনার পর নাজমুলকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। কিন্তু এটি পুলিশ কেস হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ভর্তি করতে রাজি হয়নি। পরে ভর্তি করা গেলেও ছয় ঘণ্টা সময় পেরিয়ে যাওয়ায় তার বিচ্ছিন্ন অঙ্গ জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তিনি পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
নাজমুলের বাবা বলেন, ‘যুবক ছেলেকে সবাই বিয়ের কথা বলবে, এটা স্বাভাবিক। ওর নানা ও দুলাভাই মাঝে মধ্যে বিয়ের কথা বলতো। তবে ঘটনার দিন আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমার ছেলে মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিল। চিকিৎসা করানোর পর সে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু কী কারণে এমন ভয়ঙ্কর কাজ করলো আমরা বুঝতে পারছি না।’
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নাজমুলের অস্ত্রোপচার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত। আমরা তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’