ড. ইউনূসকে ‘হারমনি অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করলেন রাজা তৃতীয় চার্লস

মানুষ ও পরিবেশের মধ্যে শান্তি, স্থায়িত্ব এবং সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় আজীবন প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে মর্যাদাপূর্ণ ‘হারমনি পুরস্কার ২০২৫’-এ ভূষিত করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস।
রাজা চার্লস ২০২৪ সালের জুনে প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জীবনযাপন উদযাপনে একটি নতুন পুরস্কার চালু করেন। পুরস্কার অনুষ্ঠানের আগে, রাজা তৃতীয় চার্লস বাকিংহাম প্যালেসে একান্ত সাক্ষাতের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসকে স্বাগত জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, ব্রিটিশ রাজা চার্লস অধ্যাপক ইউনূসের কাজের অনুরাগী। তার কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ, দারিদ্র্য বিমোচনে সামাজিক ব্যবসার প্রচারণা এবং সভ্যতাকে আত্ম-ধ্বংস থেকে বাঁচাতে তিন শূন্যের জন্য তার প্রচারণামূলক কাজ। তিনি বলেন, ‘এমনকি রাজা চার্লস অধ্যাপক ইউনূসের একটি বইয়ের ভূমিকাও লিখেছিলেন।’
৩০ মিনিট ধরে চলা এই বৈঠকে তারা বাংলাদেশের ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেন এবং প্রধান উপদেষ্টা কিং চার্লসকে বাংলাদেশে তার সরকারের নেওয়া সংস্কারমূলক উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেন। এই সাক্ষাৎকে সৌহার্দ্যপূর্ণ বর্ণনা করে শফিকুল আলম বলেন, যেহেতু রাজ চার্লস অধ্যাপক ইউনূসকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, তাই তারা অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রেস সচিব বলেন, ‘এই পুরো সফরে, আমি বলব এটি ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।’
বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে একান্তে দেখা করে বা ‘একজন শ্রোতাকে সুযোগ দিয়ে’, রাজা চার্লস নির্দিষ্ট ব্যক্তি এবং তাদের কাজের গুরুত্বের স্বীকৃতি দেন। একই সঙ্গে তাদের সম্পর্কে আরও জানার এবং তাদের একটি স্মরণীয় রাজকীয় অভিজ্ঞতা দেন। ‘শ্রোতা’ বলতে কেবল রাজা চার্লসের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকে বোঝায়। রাজা তৃতীয় চার্লসের হারমনি অ্যাওয়ার্ডের উদ্বোধনী (প্রথম) বিজয়ী ছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন।
কিংস ফাউন্ডেশনের পুরস্কারগুলো রাজা চার্লসের হৃদয়ের খুব কাছের একটি বিষয়। তিনি প্রায়শই মানবতা এবং প্রকৃতির মধ্যে মিলনের প্রায় আধ্যাত্মিক ধারণা সম্পর্কে কথা বলেছেন। এটি রাজার নীতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
বর্তমানে লন্ডনে থাকা ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বলেছেন যে, তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের যুক্তরাজ্য সফরে সন্তুষ্ট। তিনি তার ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘এই সপ্তাহে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে যুক্তরাজ্যে স্বাগত জানাতে পেরে অসাধারণ লাগছে।’ হাইকমিশনার বলেন, তার (অধ্যাপক ইউনূস) বিস্তৃত বৈঠকের কর্মসূচি গণতন্ত্র, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জলবায়ু কর্মকাণ্ড, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গাদের প্রতি সমর্থনের প্রতি তাদের অংশীদারত্বের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস মঙ্গলবার (১০ জুন) লন্ডনে পৌঁছান। অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ওপর আরও বেশি গুরুত্বসহ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নবায়নের জন্য তিনি চার দিনের সরকারি সফরে রয়েছেন।