সবাই আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে : রিজভী

সরকারের সীমাহীন নিপীড়ন নির্যাতনের কারণে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা সবাই আজ আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।
আজ মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কিছুদিন আগে এক মহামান্য বিচারপতি বলেছিলেন দেশটাকে জাহান্নামের পরিণত করা হয়েছে। সেই জাহান্নামের পরিস্থিতি সকল দিক দিয়ে গত দেড় দশক সুস্পষ্ট। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা, গণমাধ্যমকর্মীরা সবাই আজ আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে। এই অবৈধ সরকার অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে কবরস্থ করেছে, মাটিচাপা দিয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন এরা বিশ্বাস করে না। এরা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে তামাশা করে। এদের অধীনে কখনো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘বিশ্বের গণতন্ত্রকামী দেশগুলো বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। আর এই সরকারের পদত্যাগ ছাড়া বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। কেবলমাত্র একজন নিরপেক্ষ যিনি কোন রাজনীতি দলের সাথে জড়িত নয়, তার অধীনেই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, “প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাদের মন্ত্রী নেতাকর্মীরা এত কথা বলেন কিন্তু অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললে তারা এত বিচলিত হয় কেন? তারা অস্থির হয়ে যায় এক ভীতির মধ্যে পড়ে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তাদের পরিণতি কি হয় এই ভয় থেকেই তারা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে চায় না। তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গোয়েন্দা বাহিনী ব্যবহার করে প্রতিবেশি বন্ধু রাষ্ট্রের শক্তিকে ব্যবহার করছে, তা প্রতিদিন সুস্পষ্ট হয়ে উঠছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষ এখন পরাধীন। আমরা এখন একক উপনিবেশিক শাসনের অধীনে রয়েছি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার কোন শক্তির প্রতিনিধি হিসেবে এ দেশে কাজ করছে। গ্যারান্টি হচ্ছে তারা সেই সমস্ত দেশের স্বার্থ রক্ষা করবে। সেই সমস্ত দেশ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। এখানে একটা অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চলছে। আর সেই রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করেছে শেখ হাসিনার মাধ্যমে। সেজন্যে শেখ হাসিনা কাউকে তোয়াক্কা করছে না। বাংলাদেশে গণতন্ত্র থাকল আর না থাকল সেটা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, “যারা এদেশে আধিপত্য বিস্তার করতে চায় তারা এদেশের জনগণের ভালো-মন্দ বিচার করে না। এটা করে না বলেই বাংলাদেশের মানুষকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। কিন্তু অনেক দেশ বাংলাদেশের জনগণের ভালো-মন্দ এবং গণতন্ত্র চায়। গতকাল অস্ট্রেলিয়া থেকে বলা হয়েছে বাংলাদেশে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে জন্যে তাদের দেশ আপসহীন।’
সরকারের উন্নয়নের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলে বাংলাদেশের উন্নয়ন করেছে। কিসের উন্নয়ন করেছে? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বৃদ্ধি করেছে যাতে বিরোধী দল দমন করা যায়। কোথাও কোন রাজনৈতিক কর্মসূচির চিন্তা করলেই সাথে সাথে পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যাবে, এরকম পরিস্থিতি দেশে বিরাজ করছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, “এই সরকার দেশের সকল জনগণকে পশুর ঘরের মধ্যে আটকে রেখেছে। গোটা দেশকে পশুর খোয়ারে পরিণত করতে চাচ্ছে। এই অন্যায় অবিচার জুলুম আর কতদিন চলবে। আমাদের সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরায় এই জুলুম অত্যাচারের শিকার হচ্ছে না, গণমাধ্যমকর্মীরা এবং নানান পেশার মানুষ সরকারের এই জুলুম অত্যাচারের শিকার হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ করতে হলে গণতন্ত্রের আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে।”