শেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচন : চলছে মতবিনিময়

প্রতীক বরাদ্দের আগে আনুষ্ঠানিক প্রচারণার সুযোগ না থাকলেও দেখা-সাক্ষাৎ, মতবিনিময়সহ নানা আবহে জমে উঠেছে শেরপুরের জেলা পরিষদ নির্বাচন। রাজনৈতিকভাবে বিএনপি এ নির্বাচনে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্তে দুটি প্রধান দলের মধ্যে নির্বাচনী লড়াই দেখার কোনো সুযোগ নেই।
শেরপুরে বিএনপি নির্বাচনে না থাকলেও এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল এবং অপরদিকে আওয়ামী লীগের আরেক নেতা ও শেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র হুমায়ুন কবির রুমান নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় নির্বাচন জমে ওঠার আভাস প্রথম থেকেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
তবে ১১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেই বোঝা যাবে নির্বাচনের গতি-প্রকৃতি।
এদিকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার না হলেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল এরই মধ্যে মতবিনিময় শুরু করেছেন বিভিন্ন উপজেলার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে।
চন্দন কুমার পাল গতকাল শুক্রবার দিনভর নকলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে মতবিনিময় ও ভোট প্রার্থনা করেন।
এ সময় নকলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সহসভাপতি ফেরদৌস রহমান জুয়েল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মো. বুরহান উদ্দিন, সাবেক পৌর মেয়র মিজানুর রহমান, নকলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম তালুকদারসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হুমায়ুন কবির রুমানও বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় অব্যাহত রেখেছেন। শেরপুর জেলা শহরের খড়মপুরে প্রতিদিন তাঁর নির্বাচনী অফিসে ভিড় করছেন বিভিন্ন স্তরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এবার শেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজনসহ মোট ৬৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত চন্দন কুমার পাল, স্বতন্ত্র হুমায়ুন কবির রুমান, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ইলিয়াস উদ্দিন ও চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মো. মাসুদ।
এ ছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডের ১৫টি সদস্য আসনে ৪৮ জন এবং পাঁচটি সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। বিষয়টি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শেরপুরের জেলা প্রশাসক ডা. এ এম পারভেজ রহিম নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে জাতীয় পার্টি রাজনৈতিকভাবে এই নির্বাচনে অংশ নেবে না এমন ঘোষণা দেওয়ার পরও শেরপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক শেরপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ইলিয়াস উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিল বেশ কিছু রাজনৈতিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। অনেকের মতে, যদি দলীয় চাপে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবির রুমান মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন, তাহলে নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবেন তিনি। আর হুমায়ুন কবির রুমান নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকলে বিষয়টি হয়তো অন্য রকম রূপ নেবে। একইভাবে চেম্বার সভাপতি মো. মাসুদ মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও তাঁর কোনো নির্বাচনী তৎপরতা চোখে পড়ছে না।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩ ও ৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই, ১১ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ১২ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। আর প্রতীক বরাদ্দের পরই ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনকে লক্ষ রেখে প্রার্থীরা চূড়ান্তভাবে ভোটের লড়াইয়ে নামবেন।