ফুলবাড়িয়ায় নিহত কলেজশিক্ষকের গায়েবানা জানাজা

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া কলেজ সরকারীকরণের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের হামলার সময় নিহত কলেজশিক্ষক আবুল কালাম আজাদের গায়েবানা জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেল পৌনে ৫টায় উপজেলার জোড়বাড়িয়া ডি কাচারী মাঠে এই জানাজা সম্পন্ন হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও প্রাক্তন কলেজশিক্ষক আবদুর রাজ্জাকের উদ্যোগে এ গায়েবানা জানাজার আয়োজন করা হয়।
পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় ফুলবাড়িয়া কলেজ মাঠে জানাজা করতে পারেননি আয়োজকরা। জানাজায় হাজারো মানুষ অংশ নেয়।
গায়েবানা জানাজার আগে বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, ফুলবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুর রাজ্জাক, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ বি সিদ্দিক, জাতীয় পার্টির সভাপতি আলহাজ নাজমুল হক সরকার প্রমুখ।
এর আগে রোববার দুপুরে ময়মনসিংহে কলেজ সরকারীকরণের দাবিতে কলেজের ভেতরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় দুজন নিহত হন। এদের মধ্যে একজন ওই কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ এবং অন্যজন স্থানীয় মাছ বিক্রেতা সফর আলী। ঘটনার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় আরো অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে।
তবে ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজীব দাবি করেন, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার একপর্যায়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁরা মারা যেতে পারেন।
এর মধ্যে আজ সকালে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার কাজীরপুর গ্রামে পুলিশের প্রহরায় দাফন করা হয়। অপরদিকে নিহত মাছ বিক্রেতা সফর আলীকে দাফন করা হয় ফুলবাড়িয়া উপজেলার কুশমাইল কড়ইতলা গ্রামে।
এ ঘটনার পর আজ সোমবার সকাল থেকে উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৫০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে। অপরদিকে নিহত মাছ বিক্রেতার ভাই বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। তবে নিহত কলেজশিক্ষকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মামলা করা হয়নি।
পাশাপাশি এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া আজ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ময়মনসিংহের পরিচালক অধ্যাপক মো. আবদুল মোতালেব, সহকারী পরিচালক মোজাম্মেল হক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম।
প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জানান, সরেজমিনে প্রকৃত ঘটনা পরিদর্শনের পর মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তারপর মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।