শরীয়তপুরে বন্যার পানি বাড়ছেই, ত্রাণ বিতরণ শুরু

শরীয়তপুরে বন্যার পানি বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মার পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
গতকাল রোববার রাতে শরীয়তপুর ও জাজিরা পৌরসভার নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি ডুকে পড়েছে। অর্ধহারে- অনাহারে দিন কাটছে বানভাসী মানুষ।
এদিকে আজ সোমবার থেকে ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, শরীয়তপুরে বন্যা দুর্গতদের সাহায্যার্থে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় নগদ সাত লাখ টাকা, পাঁচ লাখ শুকনো খাবার, ২২৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে। নদী ভাঙন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮০০ পরিবারের মধ্যে আজ নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৩০০ পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকা ঘুরে জানা যায়, ঘরের মধ্যে মাচা পেতে শিশুদের নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে দুর্গত মানুষেরা। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে ভেদরগঞ্জ, জাজিরা, নড়িয়া, গোসাইরহাট ও সদর উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৬০টি গ্রামের প্রায় ৭০ হাজারেরও অধিক মানুষ।
টিউবওয়েল তলিয়ে যাওয়ায় দুর্গত এলকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গরু-ছাগল নিয়ে বিপাকে পড়েছে দুর্গত এলাকার মানুষ। গো-খাদ্যেরও তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ রয়েছে জেলার ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান। এখন পর্যন্ত জেলায় কোনো বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়নি।
বন্যা দুর্গতদের স্বাস্থ্য সহায়তা দিতে ভ্রাম্যমাণ মেডিক্যাল টিম চালু করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।
জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচরের বাসিন্দা সেলিম মিয়া (৩৫) বলেন, ‘বন্যার পানিতে আমাগো বাড়িঘর তলাই গেছে। জমিনের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা কৃষিকাজ করে খাই। সবকিছু তলাইয়া যাওনে আমাগো কাজকাম বন্ধ হয়ে গেছে। অহন আমারা খাইয়া না খাইয়া দিন কাটাই।’