আটকের পর আ. লীগ নেতাকে ছেড়ে দিল র্যাব

ময়মনসিংহে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও অন্য এক কর্মীকে বিদেশি পিস্তল-গুলিসহ আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১৪। পরে কর্মীকে আটক রাখলেও নেতাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনা সম্পর্কে র্যাব-১৪ আজ শুক্রবার পাঠানো এক ই-মেইল বার্তায় জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুক্তাগাছার কালির বাজারে অভিযান চালায় র্যাব। ওই সময় আবদুল বারেক (৪০) নামের এক ব্যক্তির দোকান থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি গুলি উদ্ধার করা হয়। ওই দোকান থেকে আবদুল বারেককে আটক করা হয়। একই সঙ্গে মোফাজ্জল হোসেন বুলবুল নামের আওয়ামী লীগের এক নেতাকেও আটক করা হয়। তবে পরে বুলবুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
র্যাব জানিয়েছে, আটক আবদুল বারেক মুক্তাগাছার কামারগাঁও পারলিতলা গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে। তিনি অস্ত্র ব্যবসা করতেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তাগাছা উপজেলার তাঁতী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শাহজাহান সাজু বলেন, ‘আমি যত দূর জানি এবং কালির বাজারের ব্যবসায়ী ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ করে জেনেছি, আটক বারেক সক্রিয় আওয়ামী লীগ কর্মী এবং ডাল ব্যবসায়ী। তিনি ভালো মানুষ, ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।’
বুলবুলকে আটক এবং তাঁকে হাতকড়া পরানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁতী লীগের এ নেতা বলেন, ‘সরকারি দল করি, আমরা পরিস্থিতির শিকার।’ প্রতি হাটবারেই বারেকের দোকানে বসে গল্প এবং চা পান করেন বুলবুলসহ অনেকেই। ঘটনার দিনও তিনি বারেকের দোকানে বসা ছিলেন।
মোফাজ্জল হোসেন বুলবুল বলেন, ‘মাগরিবের আজানের একটু আগে অচেনা একজন লোক এসে বারেকের দোকান থেকে আধা কেজি ডাল কিনে ১০০ টাকার নোট দেয়। পরে অন্য দোকানে বাজার করে টাকা ফেলে এসেছে জানিয়ে ডালের ব্যাগসহ বড় একটি ব্যাগ রেখে যায়। পরে আর ওই লোক ফিরে আসেননি।’
মোফাজ্জল হোসেন বুলবুল আরো বলেন, ওই ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই সাধারণ পোশাকে কয়েকজন লোক এসে দোকানিকে বলেন ‘মালটা দে’। দোকানি কী মাল দেবে—জানতে চাইলে তারা আবার বলে, ‘মালটা দে।’ পরে তাঁরা ওই অচেনা লোকের রেখে যাওয়া ব্যাগটা হাতে নিয়ে ভেতর থেকে পিস্তল ও গুলি বের করে কাউকে ফোন করে বিষয়টি জানান। এর পর ওই লোকজন তাঁদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে র্যাবের কালো জ্যাকেট বের করে গায়ে পরেন। এ সময় বুলবুল পাশেই ছিলেন। বারেককে হাতকড়া পরানোর পর বুলবুলকেও হাতকড়া পরান র্যাব সদস্যরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় ৪০ মিনিট আটক রাখার পর বুলবুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি দোকানে অস্ত্রসহ ব্যাগ রাখার ঘটনা র্যাব কর্মকর্তাদের জানানোর পরও ছাড়া হয়নি আওয়ামী লীগের কর্মী ডাল ব্যবসায়ী বারেককে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোফাজ্জল হোসেন বুলবুল বলেন, ‘কী বলব, আমরা পরিস্থিতির শিকার হয়েছি।’
জানতে চাইলে র্যাব-১৪ ক্রাইম প্রিভেনশন স্পেশাল কোম্পানির কমান্ডার মেজর সাহুল আহমেদ নভেল বলেন, ‘ভুলবশত আওয়ামী লীগ নেতা বুলবুলকে আটক করা হয়েছিল। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আটক বারেক অস্ত্র ব্যবসায়ী।’