ময়মনসিংহে ‘জাকাত ট্র্যাজেডি’র বার্ষিকী আজ

আজ ১০ জুলাই। ২০১৫ সালের এই দিনে ময়মনসিংহ শহরে জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে মারা যান পাঁচ শিশু ও নারীসহ ২৭ জন। আহত হন শতাধিক।
গত বছর ১০ জুলাই, শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের অতুল চক্রবর্তী রোড এলাকায় ‘নুরানী জর্দা’ ফ্যাক্টরির মালিক শামীম তালুকদারের বাড়িতে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একই পরিবারের সদস্য রয়েছেন তিনজন। হতাহতের ঘটনায় নুরানী জর্দা ফ্যাক্টরির মালিক শামীম তালুকদার ও তাঁর ছেলে হেদায়েত তালুকদারসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করে।
ওই সময় ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিক মামলা করেন। মামলা তদন্ত করেন এসআই মুশফিকুর রহমান। তিনি জানান, আসামিরা সবাই জামিনে আছেন। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
ওই সময় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান দুর্ঘটনা এড়াতে জাকাতের অর্থ রাষ্ট্রীয় তহবিলে জমা দেওয়ার আহ্বান জানান।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক জাকাত বিতরণে পুলিশের অনুমতি লাগবে বলে ঘোষণা দেন।
ওই সময় যারা নিহত হন : ময়মনসিংহ সদরের চরপাড়ার হায়দার আলীর স্ত্রী হামিদা বেগম (৪৫), বালুচরের থানাঘাটের আবদুল বারেকের স্ত্রী খোদেজা বেগম (৬০), পাটগুদাম বিহারি ক্যাম্পের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সিদ্দিক (১২), একই ক্যাম্পের প্রয়াত বারেকের স্ত্রী শামীমা বেগম (৬০), তাঁর মেয়ে সখিনা (৪০) ও নাতনি লামিয়া (৫), প্রয়াত লাল মিয়ার স্ত্রী হাজেরা বেগম (৭০), গোবিন্দ বসাকের স্ত্রী মেঘনা বসাক (৩৫), বসাকপট্টির সোলেমানের স্ত্রী মরিয়ম (৫০), কাচারী রোডের প্রয়াত মাহতাব আলীর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা (৭০), লালু মিয়ার স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৪৫), চর ঈশ্বরদিয়ার রবির স্ত্রী ফাতেমা (৩২), মোড়লপাড়ার ইসমাইলের স্ত্রী জোহরা খাতুন (৫২), আবদুল মজিদের স্ত্রী রেজিয়া আক্তার (৪০), দরগাপাড়ার প্রয়াত আবদুস সালামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৬০), ঢোলাদিয়ার নারায়ণ চন্দ্র সরকারের স্ত্রী সুধারানী সরকার (৫৫), শামসুল হকের স্ত্রী রহিমা বেগম (৫৫), রাজা মিয়ার স্ত্রী নাজমা আক্তার (৬০), ধোপাখোলার বজেন্দ্রর স্ত্রী রিনা রানী দে (৬০), ফজলু মিয়ার স্ত্রী জামেরন মেওয়া (৫৫), ফজলু মিয়ার স্ত্রী বেগম টুকু (৪০), আকুয়া এলাকার রতন মিয়ার মেয়ে রুবিয়া আক্তার (১২), সদরের আকুয়া খালপাড়ের হরমুজ আলীর স্ত্রী খোদেজা ও তাঁর নাতি বৃষ্টি (১২), ত্রিশাল উপজেলার বালিপাড়ার আমজাদের স্ত্রী সাহারন বেগম (৪০), তারাকান্দা উপজেলার মালিডাঙ্গার শফিকুল ইসলামের স্ত্রী সমলা বেগম (৩০) ও জামালপুর জেলার ইতি (১২)।
ওই সময় যাদের গ্রেপ্তার করা হয় : নুরানী জর্দা ফ্যাক্টরির মালিক শামীম তালুকদার, তাঁর ছেলে হেদায়েত তালুকদার, কারখানার ব্যবস্থাপক ইকবাল হোসেন, আরমান হোসেন, আলমগীর হোসেন, আরশাদুল, চালক পারভেজ ও কর্মচারী আবদুল হমিদ। মামলার পর তাঁদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয় ।
আর্থিক সহায়তা : এ ঘটনার পর ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান, বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম রওশদ এরশাদ ও জেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে নগদ টাকা ও গৃহ নির্মাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।