ঈশ্বরগঞ্জে গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা!

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ফাতেমা খাতুন (২৪) নামের এক গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
আজ শুক্রবার ভোরে উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত অবস্থায় ওই গৃহবধূকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের ভ্যানচালক বাচ্চু মিয়ার (৩০) সঙ্গে রাজীবপুর ইউনিয়নের বিল খেরুয়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের মেয়ে ফাতেমার বিয়ে হয়। নাজিম উদ্দিন গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া এলাকায় ভ্যানচালকের কাজ করেন। ছয় মাসের মেয়েশিশুকে নিয়ে একাই বাড়িতে থাকেন ফাতেমা।
বাড়িতে স্বামী নেই জেনে প্রতিবেশী দুদু মিয়ার ছেলে সোহরাব ফাতেমাকে প্রায়ই নানা প্রলোভন দেখিয়ে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। আগের দিন উত্ত্যক্তের ঘটনাটি জানিয়ে ফাতেমা তাঁর স্বামী বাচ্চু মিয়াকে বাড়িতে আসতে বলেন। পরে বাচ্চু মিয়া বাড়িতে আসার পর রাতে বিষয়টি নিয়ে সোহরাবের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। ঘটনাটি নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি সালিশের আয়োজন করেন বাচ্চু মিয়া। এ খবরে ক্ষুব্ধ হয় সোহরাব।
আজ ভোরে ফজরের আজানের পরপরই ফাতেমা নামাজের জন্য অজুর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঘর থেকে বের হতেই তাঁর শরীরে পেট্রল ছুড়ে মারে সোহরাব। এতে মুহূর্তেই আগুন ধরে যায় ফাতেমার সারা শরীরে।
পরে আক্রান্ত ফাতেমাকে উদ্ধার করতে গিয়ে স্বামী বাচ্চু মিয়ার দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ঝলসে যায়। এ ঘটনার পর থেকেই সোহরাব সপরিবারে পলাতক।
প্রতিবেশী খোরশেদা খাতুন জানান, গত মঙ্গলবার ফাতেমাকে শাড়ি দেওয়ার কথা বলে একটি কুপ্রস্তাব দেয় সোহরাব। বিষয়টি স্বামীসহ আশপাশের লোকজনের কাছে জানিয়ে এর বিচার দাবি করেন ফাতেমা। বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিয়ে সোহরাবের সঙ্গে বাচ্চুর কথাকাটাকাটি হয়। শুক্রবার ভোরে ফাতেমাকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়।
বাচ্চু মিয়া জানান, সেহরি খেয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়ছিলেন। তাঁর স্ত্রী কোরআন পড়ছিলেন। হঠাৎ ফাতেমার ভয়ার্ত চিৎকারে তাঁর ঘুম ভাঙে। স্ত্রীকে উদ্ধার করতে গিয়ে তাঁর দুটি হাতও পুড়ে যায়। ফাতেমা তখন সোহরাবকে ধরতে চিৎকার করছিলেন।
সোহরাবের চাচা ফিরোজ মিয়া ঘটনার বিষয়টি শুনেছেন জানিয়ে বলেন, ‘সোহরাব প্রকৃত দোষী হলে এর উপযুক্ত বিচার চাই।’
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল আলম খান জানান, এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হযেছে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) হামিদুল ইসলাম ফাতেমার উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, সম্ভবত পেট্রল ঢেলে দিয়ে শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে। আসামি ধরতে চেষ্টা করছে পুলিশ।