ময়মনসিংহে ডিজিটাল মেলায় অনিয়মের অভিযোগ, উদ্ভাবকরা মূল্যায়িত হননি

ময়মনসিংহে দুই দিনব্যাপী বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা শেষে বেশির ভাগ পুরস্কার পেয়েছেন কর্মকর্তারা। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি পর্যায়ের অনেক উদ্ভাবক মেলায় অংশ গ্রহণ করলেও তাঁরা মূল্যায়িত হননি ।
জামালপুরের উদ্ভাবক তৌহিদুল ইসলাম তাপস আবিষ্কার করেছেন বর্জ্যদূষণ নির্মূল করার নিরাপদ সাশ্রয়ী যন্ত্র। তাঁর এই আবিষ্কারের বিশেষ দিক হলো, প্লাস্টিকের বর্জ্য থেকে তৈরিকরা কার্বন দেশের ফটোকপি, লেজার মেশিন এর ব্যাপক কালির চাহিদা মিটাবে। পাশাপাশি এই বর্জ্য পলিথিন থেকে তৈরি হবে ধারাবাহিক ভাবে, পেট্রল, অকটেন এবং কার্বন । তাঁর মতো নেত্রকোনার উদ্ভাবক রিয়েল মিয়া। তাঁর আবিষ্কার ‘লেজার সিকিউরিটি সিস্টেম’ ও ‘অটো লাইট সিস্টেম’। এই সিস্টেম জেলা পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় প্রতিযোগিতায় জ্যেষ্ঠ গ্রুপে প্রথম স্থান লাভ করে আসে বিভাগীয় পর্যায়ে । লেজার ডিভাইস টেকনোলজি ব্যবহার করলে খরচ হবে ৭০০ থেকে একহাজার টাকা ।দ্বিতীয়টায় খরচ হবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা মাত্র। প্রথমটায় আগন্তুক দেখা মাত্র মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা বা স্বয়ংক্রিয় কল পাবেন ব্যবহারকারী। দ্বিতীয়টিতে এক্সট্রা ডিভাইস লাগানো থাকবে । সুর্যের আলো ওটা ওপর পরা মাত্র লাইট নিভে যাবে। আবার সুর্যের আলো শেষ হওয়া মাত্র স্বয়ক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠবে লাইট ।
ময়মনসিংহে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় আয়োজিত দুই দিনব্যাপী (১২-১৩ মে) ‘ডিজাটাল উদ্ভাবনী মেলা-১৬’ তে অংশ নিয়েছিলন তৌহিদুল ইসলাম ও রিয়েল মিয়া। তবে দুজনের কারো ভাগ্যেই পুরস্কার জোটেনি।
উল্লিখিত মেলায় পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন, শ্রেষ্ঠ জেলা কর্মকর্তা জেলা প্রশাসক মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী (ময়মনসিংহ), শ্রেষ্ঠ পোর্টালের দপ্তর জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় (জামালপুর), শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (ময়মনসিংহ), শ্রেষ্ঠ ই-সেবাদানকারী বিভাগীয় দপ্তর জনতা ব্যাংক। এ ছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে জিনিয়া রহমান (বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন ডিজিটালাইজেশন), ড. তরিকুর ইসলাম খান ওয়াসিম (অনলাইন ব্লাড ব্যাংক), আনোয়ার শাহাদৎ (ব্যাটারীরিচালিত জীবনরক্ষার শক কন্ট্রোলার)।
নেত্রকোনার এডিসি (রাজস্ব) ড. আ. রহিম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী উত্তীর্ণদেরকেই আমরা বিভাগীয় মেলায় পাঠিয়েছি । সেখানে আলাদা মূল্যায়ন কমিটি ছিল, উদ্ভাবকরা কেন মুল্যায়িত হননি সেটা তারাই বলতে পাবে । তবে তিনি বলেন, নেত্রকোনা পৌর ও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার মূল্যায়িত হয়েছে ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক উদ্ভাবক বলেন, এটুআই রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ‘বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায়’ ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় উত্তীর্ণদের পাঠানোর ফলে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে । জেলা পর্যায়ে উদ্ভাবকদের অপ্রতুলতার কারণে প্রশাসন তাদের বিভাগীয় মেলায় পাঠিয়ে নিজেদের ফায়দা হাসিল ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। এটি বড় ধরনের অনিয়ম।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার অফিসের আয়োজনে মেলার সমন্বয়কারী এডিসি জেনারেল (আইসিটি ও শিক্ষা) শারমিন জাহান বলেন, এটুআই প্রকল্পের আওতায় ভ্রমণ হ্রাস, স্বল্প সময় ও খরচে, উন্নত নাগরিক সেবার বাস্তব প্রয়োগ ‘একটি নাগরিক সমস্যার সমাধান’ প্রতিযোগিতায় স্থানীয় পর্যায়ে উত্তীর্ণদের জেলা থেকে বিভাগীয় মেলায় পাঠানোর কথা ছিল। উল্লেখিতরা মূল্যায়িত হয়নি, এটি কমিটির ব্যাপার।
ময়মনসিংহসহ বিভাগের অপর তিন জেলায় এটুআই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এডিসি (আইসিটি) একটি পদ থাকলেও নিয়োগ হয়নি। এই কারণে এই প্রকল্পের কর্মকাণ্ডসহ বিঘ্নিত হওয়াসহ নানা সমষ্যা সৃষ্টি হয়েছে । তারাই প্রভাব পড়েছে বিভিগীয় ডিজটাল উদ্ভাবনী মেলায় ।