রিভিউর বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেবেন খাদ্যমন্ত্রী

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, আপিল বিভাগের রায়ের কপি হাতে পেলে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আলোচনা করেই পুনির্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে রিভিউ করা হবে।
আজ সোমবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন খাদ্যমন্ত্রী। এর আগে তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে নিজ দপ্তরে ফিরলে সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও সাতদিনের কারাদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করবেন কি না জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি নিজেও একজন আইনজীবী। আমার নিজেরও চিন্তাভাবনা আছে। আর আপিল বিভাগের রায়ের কপি হাতে পেলেই জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’
তবে জরিমানা ও সাতদিনের কারাদণ্ডের পর তিনি মন্ত্রী পদে থাকবেন কি না, এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি খাদ্যমন্ত্রী।
খাদ্যমন্ত্রীর প্রতি সাংবাদিকদের অপর একটি প্রশ্ন ছিল, সর্বোচ্চ আদালতের দণ্ডের পর মন্ত্রীর শপথ ভঙ্গ হয়েছে কি না? এর উত্তরে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন আইনমন্ত্রী।
পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে শপথ ভঙ্গ প্রসঙ্গে একই প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, আদালতের রায়টির শপথ ভঙ্গের কোনো বিষয় জড়িত নয়। আইনমন্ত্রী আরো বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের দণ্ডাদেশের পর মন্ত্রী পদে থাকার বিষয়ে কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। তবে এখানে নৈতিকতার প্রশ্ন জড়িত। মন্ত্রী পদ থেকে তাঁরা পদত্যাগ করবেন কি না, তা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
গত ৫ মার্চ রাজধানীতে এক সেমিনারে প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করেন দুই মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আ ক ম মোজাম্মেল হক। প্রধান বিচারপতি তাঁর আসনে থাকতে চাইলে ‘অতিকথন’ বন্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন এক মন্ত্রী।
একই সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া মীর কাসেম আলীর মামলায় আপিল বিভাগের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি যেসব মন্তব্য করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে ওই মামলায় পুনরায় শুনানি করার আহ্বান জানান দুই মন্ত্রী।
ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। এ জন্য তাঁদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে সাতদিনের কারাদণ্ড দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আদেশ দেওয়ার সময় আপিল বিভাগ বলেন, ‘দুই মন্ত্রীকে ডাকার মাধ্যমে সারা জাতিকে জানাতে চাই, কেউ আদালত অবমাননা করলে আমরা কতটা কঠোর হতে পারি।’