মানিকগঞ্জে ভাগনেদের হাতে দুজন খুন

অর্থ-সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় ভাগনেদের হাতে দুজন খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ রোববার সকালে গোবিন্দল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্বজনরা জানিয়েছে, পরিকল্পিতভাবে ভাগনে জাহিদুল ইসলাম (৪৫), রশিদ হোসেন (৩৮) ও জসিম উদ্দিনের (৩০) নেতৃত্বে আট থেকে দশজন ঘরে আটকে রেখে লাঠি, বল্লম ও ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে দুজনকে খুন করেন।
নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের আজিজ মোল্লা (৫৫) ও টেনডল মোল্লা (৫০)। তাঁরা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। এ সময় ভাগনে ও তাদের লোকজনের হামলায় টেনডলের স্ত্রী কমেলা বেগম (৪০), ভাই করিম মোল্লা (৪০), ছেলে আল-আমিন (১৩), শ্যালক রমজান হোসেন (২৮) ও আলমগীর হোসেন (৩০) আহত হয়েছেন।
নিহতদের চাচাতো ভাই বেলায়েত হোসেন জানান, বাহরাইনে টেনডলের বোন হাসিনা ও আরেক বোনের ছেলে রশিদ একই সঙ্গে থাকতেন। পাঁচ মাস আগে বাহরাইনে হাসিনা মারা গেলে সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। হাসিনা নিঃসন্তান হওয়ায় তাঁর প্রায় ২৮ লাখ টাকা ও নিজ গ্রামে কেনা ৩৬ শতাংশ জমি জাহিদুল ও জসিমরা হাতিয়ে নেন। এ অর্থ-সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে টেনডলের সঙ্গে ভাগনেদের বিরোধের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে এ নিয়ে ভাগিনাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন টেনডল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে টেনডলকে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিতে বলা হয়। কিন্তু টেনডল তা মানেননি। এই বিরোধের জের ধরে মামাদের সঙ্গে ভাগনেদের কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
বেলায়েত আরো জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টেনডলকে ভাগনেরা হাতুড়ি দিয়ে পেটায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে আজিজ, টেনডল ও করিম পাশেই ভাগনেদের বাড়িতে যায়। এ সময় পরিকল্পিতভাবে জাহিদুল, জসিম, রশিদ ও তাঁর বাবা শামসুল ইসলাম, মা রাজিয়াসহ আট-১০ জনকে তাদের ঘরে আটকে রেখে লাঠি, বল্লম ও ধারালো দা দিয়ে কোপায়। এ খবর পেয়ে টেনডলের স্ত্রী, ছেলে ও শ্যালকরা ওই বাড়িতে গেলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই আজিজ ও টেনডল নিহত হন। আর করিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও অন্যদের ঘোনাপাড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে করিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে স্বজনদের জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাকির হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর পরই হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে লাঠি, বল্লম ও দা জব্দ করা হয়েছে। আর জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।