হাত পেতে নয়, নিজের মর্যাদায় চলব : প্রধানমন্ত্রী

আর্থ-সামাজিক উন্নতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি অবস্থান করে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন তিনি।
আজ শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২০১৬ সালের একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
‘কারো কাছে হাত পেতে নয়, আমরা নিজের মর্যাদায় চলব। আমাদের যতটুকু সম্পদ আছে তা ব্যবহার করে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশে পরিণত করবো’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে। এ ছাড়া ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
নিজের বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার আমাদের অর্জন করতে হয়েছে বহু সংগ্রামের পথ বেয়ে। সেই ১৯৪৮ সাল থেকে এই সংগ্রামের শুরু। সালাম-বরকতদের রক্তের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের মাতৃভাষা পেয়েছি।’
বক্তব্যে ভাষা আন্দোলনের শহীদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩০ লাখ মানুষকে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একটি জাতিকে জাতি হিসেবে ধ্বংস করার যে অপচেষ্ট করা যায় সেটাই করা হয়েছিল ভাষার ওপর আঘাত দিয়ে। এক হাজার ২০০ মাইল দূরের পাকিস্তান নামক দেশটি চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল উর্দু ভাষা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালেয়ের ছাত্ররা তাৎক্ষতিকভাবে এর প্রতিবাদ করে। এরপরই ৪৮ সালে ভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এই সংগ্রাম করতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে বারবার কারাবরণ করতে হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জন্য শুধু একটি দিবস নয়। একুশ অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করতে শেখায়। আমাদের আত্মমর্যাদাবোধের শিক্ষা দেয়।’
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারিকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতির স্মৃতিচারণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মর্যাদা রয়েছে। একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা এসেছে।
বক্তব্যে একুশে পদক পাওয়া গুণীজনদের সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মর্যাদা রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। এই পুরস্কারের মাধ্যমে তাঁদের পদাঙ্ক অনেকেই অনুসরণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।