পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক অবনমনের পরিকল্পনা নেই : শাহরিয়ার আলম

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বাংলাদেশি কূটনীতিক প্রত্যাহারে পাকিস্তানের অনুরোধ দুই দেশের সম্পর্কের জন্য সহায়ক নয়। কারণ বাংলাদেশি কূটনীতিক মৌসুমী রহমানকে কেন প্রত্যাহার করে নিতে হবে-এ ব্যাপারে পাকিস্তান কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। তবে এজন্য এই মুহূর্তে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে অবনমনের কোনো পরিকল্পনা নেই।
আজ বুধবার বিকেলে প্রতিমন্ত্রী তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে পাকিস্তানের আহ্বানের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এ সব কথা বলেন। বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ খুব নিবিড়ভাবে এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম জানান, তাঁরা আগেই জানতেন যে এখানে একটি প্রতিশোধমূলক কাজ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘তাই আমরা প্রস্তুত ছিলাম এবং এটিই দেশের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে তাঁকে (মৌসুমী রহমান) অন্য আরেকটি দেশে কূটনীতিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের সাহায্য করেছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য বোধগম্য নয় যে পাকিস্তান কেন কোনো কারণ দর্শানো ছাড়া এ ধরনের আহ্বান জানাল। আমরা জানতাম, কোনো কিছু ঘোট পাকানো হচ্ছে।’ তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব মৌসুমী পর্তুগালের লিসবনে যোগ দেবেন।
পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ তাঁর সম্পর্কের অবনমন ঘটাতে যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এই মুহূর্তে এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই। কিন্তু এ ধরনের কোনো সম্ভাবনাকে প্রত্যাখ্যানও করা যাচ্ছে না। আমি কোনো আগাম মন্তব্য করতে চাই না।’
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে নষ্ট করতে চায় এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক ব্যবহার করে বাংলাদেশে সমস্যা সৃষ্টি করতে চায়-এমন কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। অতীতেও কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি।’
অন্য আরেকটি প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম জানান, চাইলে আগামী জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমান সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হতে পারে। দ্বিপক্ষীয়, বাণিজ্য ও বহুপক্ষীয় ফোরামসহ বিভিন্ন বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একই ধরনের কিছু স্বার্থ রয়েছে।
ইউএনবির খবরে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সোহরাব হোসেনকে তলব করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের কূটনীতিক মৌসুমী রহমানকে প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয় এবং মৌসুমীকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে জানাতে বলা হয়।
গত ২৩ ডিসেম্বর জঙ্গি অর্থায়নের অভিযোগে ঢাকা থেকে ইসলামাবাদে পাকিস্তানি কূটনীতিক ফারিনা আরশাদকে ফেরত পাঠানো হয়। এরই জের ধরে পাকিস্তানের কাছ থেকে এই আহ্বান এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সোহরাব হোসেন বাংলাদেশে ছুটিতে আসার পর মৌসুমী রহমান ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু তিনি পাকিস্তানের বাংলাদেশ দূতাবাসে রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত।