পুলিশ সেজে ছিনতাই, খোঁজা হচ্ছে দুই যুবলীগ নেতাকে

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বিষখালী নদীতে পুলিশ পরিচয়ে যাত্রীবাহী লঞ্চ থামিয়ে ব্যবসায়ীর ১০ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত আরো তিনজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। ছিনতাইয়ের শিকার ব্যবসায়ী বাদশা হাওলাদার বাদী হয়ে আজ সোমবার সকালে নলছিটি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এজাহারভুক্ত দুই আসামি হলেন উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মো. সোহাগ ও কুড়ালিয়া গ্রামের মো. সুফিয়ান। তাঁরা দুজনই যুবলীগ নেতা। সোহাগ নাচনমহল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মো. সুফিয়ান একই ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড শাখা যুবলীগের সভাপতি।
মামলার বাদী উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের আমতলী গ্রামের মৃত চান্দু হাওলাদারের ছেলে ব্যবসায়ী বাদশা হাওলাদার অভিযোগ করেন, বাকেরগঞ্জ উপজেলার নেয়ামতি লঞ্চঘাট থেকে দুপুরে তিনি মালামাল কিনতে ১০ লাখ টাকা নিয়ে ঝালকাঠির উদ্দেশে তুহিন নামে একটি লঞ্চে ওঠেন। লঞ্চটি বিষখালী নদী দিয়ে যাওয়ার সময় বিকেলে নলছিটির ইসলামপুর এলাকায় আসে।
এ সময় একটি ট্রলারে করে পাঁচজন লঞ্চটি থামতে বলেন। এর মধ্যে দুজন ছিল পুলিশের পোশাক পরা। লঞ্চটি থামিয়ে তাঁরা বাদশা হাওলাদারকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে বাদশাকে কাপড় দিয়ে চোখ ও হাত বেঁধে ট্রলারে নিয়ে তোলেন। এ সময় তাঁর হাতে থাকা টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে ট্রলার চালিয়ে ভারানি খালের পাশে এসে ছিনতাইকারীরা বাদশাকে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় ট্রলারটির মালিক ও তাঁর ছেলেকে আটক করে পুলিশ।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় সোহাগ ও সুফিয়ানকে আসামি করে মামলার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে তাঁরা পলাতক। আমরা স্থানীয় সোর্সদের মাধ্যমে তাঁদের অবস্থানের ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি।’
তাঁরা যে দলেরই হোক, তাঁদের গ্রেপ্তার করা হবে। এ দুজন পুলিশের পোশাক কোথায় পেল, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ট্রলারচালক পুলিশকে জানান, ভবানীপুর গ্রামের সোহাগ ও কুড়ালিয়া গ্রামের সুফিয়ান পুলিশের পোশাক পরে আরো তিন ব্যক্তিসহ পাঁচজন ট্রলার ভাড়া করে তাঁকে নিয়ে যায়। লঞ্চ থামিয়ে তারা এক ব্যক্তিকে চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় ট্রলারে তোলে। চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায়ই তাঁকে ট্রলার থেকে নামিয়ে দিয়ে ওই পাঁচজন চলে যায়।
তুহিন লঞ্চের সুকানি পরিতোষ বলেন, ‘ট্রলারে এসে লঞ্চে ওঠেন পাঁচজন ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে দুজন পুলিশের পোশাক পরা ছিলেন। আমরা জানতে চাই, কী কারণে আপনারা লঞ্চে উঠেছেন? তাঁরা বলেন, আমরা পুলিশের লোক। লঞ্চে এক আসামি আছে। তাঁকে ধরতে এসেছি। এর পরে এক ব্যক্তিকে ধরে ট্রলারে তোলেন তাঁরা।’