জাপার সাবেক এমপিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আনিসুর রহমান মানিকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিটফুল ইসলামের ৩ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আদালত পরে আদেশ দেবেন।
মামলার বাদী হয়েছেন ত্রিশাল উপজেলার বারই গ্রামের হাফিজ উদ্দিন (৬০)। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকার সময় তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন মানিকের ছোট ভাই মুকলেছুর রহমান (৬৬), সাইদুর রহমান রতন (৬৩), শামসুল হক ফকির (৭৩) ও সুলতান আহম্মদ ফকির (৬৬)।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে ১০ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ হামনকে নিজ বাড়ি থেকে রাজাকাররা ধরে আহাম্মদাবাদ ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করে। একই দিন রাত ৮টার সময় রাজাকার কমান্ডার আনিসুর রহমান মানিক একটি চেয়ারে বসে হামিদকে বলেন, ‘যা পায়ে হেঁটে গিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’ হামিদ উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করলে মানিক রাইফেল দিয়ে তাঁর বুক লক্ষ্য করে গুলি করেন। এতেই মৃত্যু হয় হামিদের।
মামলার আর্জিতে বাদী নিজেকে স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বলে পরিচয় দেন। বাদীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, পীযূষ কান্তি সরকার ও সাদিয়া আফসানা লিনা।
আইনজীবী মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল জানান, বাদীর বাড়িতেও রাজাকার কমান্ডার মানিকের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে ২০-২৫ জনের একটি রাজাকার দল হামলা চালিয়ে ধান, চাল, পুকুরের মাছ লুট করে। যাওয়ার পথে বারই গ্রামের আওয়ামী লীগ কর্মী আবদুস সোবহান আকন্দকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে মালামাল লুট করে রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। অভিযুক্ত মানিক আবদুস সোবহান আকন্দকে দুদিন ক্যাম্পে রেখে নির্যাতন করে সাত হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। ১৯৭১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে অভিযুক্ত মানিক আবার বাদীর বাড়িতে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র লুট করেন। বাড়ির সব ঘর তালাবদ্ধ করে আগুন ধরিয়ে দিলে গোয়ালে থাকা আটটি গরু আগুনে পুড়ে মারা যায়। এ সময় আরো কয়েকজনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। কুষ্টিয়া গ্রামের শিক্ষক কিরন পণ্ডিত, দীনেশ স্যারসহ অনেক হিন্দু পরিবারকে জোর করে ধর্মান্তর করেছেন। একই গ্রামে নরেন্দ্রসহ বেশ কিছু মানুষকে ক্যাম্পের পেছনে গণকবর দিয়েছেন।