‘খালেদা জিয়া কি ভারতে যায় নাই?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া কি ভারতে যায় নাই? জিয়াউর রহমান কি যায় নাই? জিয়াউর রহমান তো ক্ষমতা দখল করার দুই বছরের মধ্যেই ভারতে গিয়েছিল। ১৯৭৭ সালের ডিসেম্বরে জিয়াউর রহমান ভারতে যায়। কেন গিয়েছিল? সেটা বিএনপিকে জিজ্ঞেস করেন।’
আজ বুধবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, ‘বিএনপিসহ কিছু কিছু ব্যক্তি বলছেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বারবার আপনি ভারত সফর করছেন। বিষয়টি কি আসলেই তাই?’
এরই পরিপ্রেক্ষিতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষমতা দখল করেই তো আগে ভারত ছুটল। খালেদা জিয়াও গিয়েছিল। আজ তারা তিস্তার পানি পানি করে, এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল গঙ্গার পানি। খালেদা জিয়া যখন ভারতে গেল ফিরে এসে কী বলেছিল? গঙ্গার পানির কথা বলতে তো ভুলেই গিয়েছিলাম। বিএনপির নেতাদের কি মনে আছে উনাদের নেত্রী ভারত সফরে গিয়ে গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা চাইতে ভুলেই গিয়েছিলেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি করে গিয়েছিলেন। আমাদের স্থল সীমানা চুক্তি। আইন করে গিয়েছেন। ভারতের পার্লামেন্টে তখনো পাস হয়নি। আওয়ামী লীগ আসার পর ৬৮ বছরের সমস্যার সমাধান করে ভারতে সর্বসম্মতিক্রমে তাদের পার্লামেন্টে বিলটা তারা পাস করে। ১৯৭১ সালে যেমন ভারতে দল-মত নির্বিশেষে সবাই এক হয়, ঠিক আরেক দিন তারা সবাই এক হয়ে ভোট দিয়ে বিলটা পাস করে দেয়। আমরা ছিটমহল বিনিময় করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন এ চুক্তি করেছিলেন, পুরোনো পত্রিকা খুঁজে দেখেন লেখা হয়েছে বেরুবাড়ি গেল, দেশ বেচে গেল। কতজন যে লিখেছে! যারা লিখেছে তারা অনেকে বেঁচে আছে, অনেকে বেঁচে নেই। যারা বেঁচে আছেন তারা লজ্জা পাচ্ছে, পেয়েছে। যারা মারা গেছে তাদের আত্মাও লজ্জা পাচ্ছে। কত মিথ্যা কথা তারা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে লিখেছিল!’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশ এত শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময় করতে পারেনি। ছিটমহল নিয়ে অনেক দেশে যুদ্ধ চলছে। আমরা কত সহজে উৎসবমুখর পরিবেশে ছিটমহল বিনিময় করেছি।’
গত ২৫ মে দুই দিনের সরকারি সফরে কলকাতা যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে শান্তিনিকেতনে বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশে ভবন’ উদ্বোধন করেন।
এ সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ভবনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বিশ্ব ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে যোগ দেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে সম্মানসূচক ডি-লিট (ডক্টর অব লিটারেচার) ডিগ্রি গ্রহণ করেন। সফরে শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেন।
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী এই সফরে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত ‘জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ি’ এবং কলকাতায় ঐতিহাসিক ‘নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু’ জাদুঘর পরিদর্শন করেন।