শেখ হাসিনার বহরে হামলার আসামিদের নিয়ে উদ্বোধন!

পাবনায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেন বহরে হামলা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত দুই আসামিকে সঙ্গে নিয়ে একটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়েছে। পাবনার ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টু আজ মঙ্গলবার ওই ক্লিনিক উদ্বোধন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ঈশ্বরদী শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে প্রধান অতিথি হিসেবে ‘হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’ নামের একটি ক্লিনিক উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর জামাতা ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মিন্টু। জনৈক চাঁদ আলী প্রামানিকের ছেলে রফিকুল ইসলাম রিপন এই ক্লিনিকের মালিক। এই ক্লিনিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও সাংবাদিকদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেন বহরে হামলার অন্যতম দুজন আসামি ঈশ্বরদী পৌরসভার প্যানেল মেয়র বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন জনি (৪০) ও পৌর যুবদলের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহিন (৪৫) প্রধান অতিথি আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে হাতে হাত রেখে হাসি মুখে একই সঙ্গে ফিতা কাটেন। এ সময় উপস্থিত সবার মধ্যে নানা গুঞ্জন শোনা যায়।
পাবনা জজ কোর্টের আইনজীবী আক্তারুজ্জামান বলেন, ১৯৯৪ সালে বিরোধীদলীয় নেতা থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা খুলনা থেকে ট্রেনে করে নীলফামারীর সৈয়দপুরের উদ্দেশে রওনা হন। পাবনার ঈশ্বরদীতে তাঁর একটি পথসভায় ভাষণ দেওয়া কথা ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী পৌঁছালে ৫০-৬০ সশস্ত্র সন্ত্রাসী ট্রেনটিকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমা হামলা চালায় এবং পথসভার জন্য তৈরি মঞ্চ ভেঙে দেয়। শেখ হাসিনা অক্ষত থাকলেও তাঁর বহরে থাকা ৩০-৩৫ সঙ্গী আহত হন এবং শেখ হাসিনার পূর্ব নির্ধারিত পথসভাও পণ্ড হয়ে যায়। পরে ঈশ্বরদীর বিএনপি ও যুবদলের ৫০-৬০ নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হলে পুলিশ অন্যতম হামলাকারী ঈশ্বরদী পৌরসভার প্যানেল মেয়র বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন জনি ও পৌর যুবদলের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহিনসহ ৫২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। মামলাটি বর্তমানে পাবনার স্পেশাল ট্রাইবুন্যাল-৩ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে আইনজীবী আক্তারুজ্জামান জানান।
এ ব্যাপারে মামলার আসামি বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন জনি বলেন, ‘তখন আমার বয়স ছিল ১৯-২০ বছর। এখন ৪০ বছর। কাজেই ওই সময়ে কী করেছি, তা ভুল ছিল কি শুদ্ধ ছিল তা সে সময়ের ব্যাপার। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। তাই এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব না।’
দুই আসামিকে নিয়ে ক্লিনিক উদ্বোধন করার ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উদ্বোধনের সময় ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সভাপতি আকবর আলী বিশ্বাস, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহিন, সাধারণ সম্পাদক এস এম ফজলুর রহমানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ক্লিনিকের পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।