চলন্ত বাসের চাকায় আটকে ছিলেন মা, ছুটছিলেন ছেলে

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে একটি ইজিবাইকে করে যাচ্ছিলেন শিউলি আক্তার ও তাঁর ছেলে তুহিন। ইজিবাইকটি রাস্তায় মোড় নিতে গিয়ে হঠাৎ উল্টে যায়। ইজিবাইক থেকে ছিটকে পড়েন শিউলি আক্তার।
চোখের পলকেই ছুটে চলা কিশোরগঞ্জগামী এম কে সুপার নামের একটি বাস চাপা দেয় শিউলিকে। বাসের চাকায় আটকেই থাকে শিউলির দেহ। এদিকে বাস ছুটছে তো ছুটছেই। এভাবেই প্রায় আধা কিলোমিটার চলতে থাকল বাস। আর পিষ্ট হতে থাকা মাকে বাঁচাতে চলন্ত বাসের পেছনে ছুটতে থাকেন ছেলে তুহিন।
এক সময় বাস থামলে বাসের চাকা থেকে মায়ের নিথর দেহ ছাড়াতে প্রাণান্তর চেষ্টা করতে থাকেন তুহিন। বাস ঠেলতে থাকেন ছেলে। যোগ দেন আশপাশের লোকজনও।
ঘটনার পর বাসে আগুন ধরিয়ে দেয় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ছবি : এনটিভি
কিন্তু সব শেষ। মায়ের নিথর দেহের সামনে আহাজারি করতে থাকেন তুহিন। এদিকে বাস ও ইজিবাইকের চালক পালিয়ে যান। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেন।
এ ঘটনার পর তুহিন ঈশ্বরগঞ্জ থানায় বাস চালকের নামে একটি মামলা করেন। কিন্তু বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় বাস মালিক আবদুল হান্নানও পাল্টা একটি মামলা করেন। মামলায় এলাকার ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশের ভয়ে অনেকেই এখন এলাকা ছাড়া।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) গোলাম মওলা জানান, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে।
তুহিন স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, তাঁকে নিয়ে মায়ের অনেক স্বপ্ন ছিল। দুর্ঘটনা তাঁর সব স্বপ্ন উলটপালট করে দিয়েছে।