ছয় প্রার্থীর তিনজনেরই চোখ ব্যবসায়ী পরিবারে

আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হচ্ছে ময়মনসিংহ জেলার নতুন পৌরসভা হালুয়াঘাট পৌরসভা নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে চলছে উৎসব আমেজ। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পৌর এলাকা। প্রার্থীরা রাতদিন নির্ঘুম ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন ভোটের আশায়। দিচ্ছেন নানান রকম প্রতিশ্রুতিও। ভোটাররাও কম যাচ্ছেন না, তাঁরাও হিসাব কষছেন কাকে নির্বাচন করলে মাদক, সন্ত্রাস হবে না; নিজেদের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হবে।
হালুয়াঘাট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন ছয়জন। এ ছাড়া নয়টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলার পদে ৪৫ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১০ নারী প্রার্থী নির্বাচনী মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
বিএনপিদলীয় প্রার্থী আব্দুল হামিদ, প্রতীক ধানের শীষ। আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. খায়রুল আলম ভূঞা, প্রতীক নৌকা। উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদিম আহমেদ স্বতন্ত্র প্রার্থী, প্রতীক কম্পিউটার। সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সালেহ আহম্মদ লড়ছেন নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে। অন্যদিকে আরো দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রশান্ত কুমার সাহা মোবাইল ফোন ও আব্দুল মোতালেব জগ প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন।
নতুন পৌরসভার উন্নয়নে ভোটাররা সৎ, যোগ্য, উন্নয়নবান্ধব ও দুর্নীতিমুক্ত প্রার্থীকে ভোট দিতে উৎসাহী। ভোটাররা চান, এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, সমাজকে মাদকমুক্ত করবে এমন প্রার্থী। যারা নির্বাচিত হয়ে ভোটারদের বিপদে-আপদে পাশে থাকবেন।
স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নাদিম আহমেদ বলেন, তিনি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। দল তাঁকে মনোনয়ন দেয়নি। তিনি ব্যবসায়ীদের পছন্দের প্রার্থী। হালুয়াঘাটে চার হাজারের মতো ব্যবসায়ী আছেন। ব্যবসায়ী পরিবারের সাড়ে তিন হাজার ভোট পেলেই তিনি বিজয়ী হবেন।
বিএনপিদলীয় প্রার্থীর বিষয়ে নাদিম বলেন, তিনি (আব্দুল হামিদ) বিএনপির কেউ নন। তাঁর স্ত্রী, মা ও পরিবারের কেউ তাঁকে ভোট দিতে পারবেন না। তিনি ছাড়া তাঁর পরিবারের কেউ পৌরসভার ভোটার না।
অন্যদিকে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সালেহ আহম্মদ বলেন, ‘জনগণ আমার সঙ্গে আছে। আমি দীর্ঘদিন জনপ্রতিনিধি ছিলাম। মানুষের সেবা করেছি। জনগণের পছন্দ আমি। তবে আমাকে ভোট দিলে পরে ভোটারদের মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থীর কর্মীরা।’
স্বতন্ত্র আরেক প্রার্থী প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ব্যবসায়ী সমাজের নেতৃত্ব দিয়েছি।’ তিনিও ব্যবসায়ীদের ভোটে বিজয়ী হওয়ার আশা করছেন।
একই রকম বক্তব্য দিয়েছেন আরেক স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আব্দুল মোতালেব।
বিএনপিদলীয় প্রার্থী আব্দুল হামিদ বলেছেন, নির্বাচনী প্রচার কাজে সরকারি বা অন্য দলের মতো তাঁরা সুবিধা পাচ্ছেন না। তারপরও নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হবেন।
আর আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. খায়রুল আলম ভুঞা বলেছেন, ভয় প্রদর্শনের কথা মিথ্যা। বরং সরকারি দলের প্রার্থী হিসেবে তিনি অন্যের প্রতি সহনশীল। তিনি সরকারি দলের প্রার্থী। জনগণ উন্নয়ন চাইলে তাঁকেই বেছে নিবেন। তাহলেই পৌরসভার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হবে।
৬ দশমিক ৫৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের হালুয়াঘাট পৌরসভায় ৫১ হাজার অধিবাসী। পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৪২৭ জন। নারী ভোটার ৭ হাজার ২০০, বাকিরা পুরুষ ভোটার।
২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি হালুয়াঘাটকে নতুন পৌরসভা ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন সরকার। চলতি বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন হালুয়াঘাট পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে।
পৌরসভায় নয়টি ভোটকেন্দ্র, কক্ষ ৪৮টি, অস্থায়ী কক্ষ তিনটি। নির্বাচনে একজন রিটার্নিং ও একজন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। থাকবে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য।
ইউপি নির্বাচন
হালুয়াঘাট পৌরসভা ছাড়াও জেলার সদর, নান্দাইল ও গৌরীপুর উপজেলায় তিনটি ইউনিয়নে একটি করে ওয়ার্ডে শূন্য পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।