আগস্টের মধ্যে মহাসড়কের পাশের বিলবোর্ড সরানোর নির্দেশ

গাজীপুর জেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে আগস্ট মাসের মধ্যে মহাসড়কের পাশ থেকে অপ্রয়োজনীয় বিলবোর্ড সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এ সময়ের মধ্যে বিলবোর্ড না সরালে সেপ্টেম্বর থেকে নিজে অভিযানে নামবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার দুপুরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পরিদর্শনে এসে গাজীপুর মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি মহাসড়কে পরিবহন চলাচল পর্যবেক্ষণ করেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, গাজীপুরের মতো এত বিলবোর্ড দেশের কোথাও নাই। মহাসড়কের পাশে কোনো অপ্রয়োজনীয় বিলবোর্ড থাকবে না। আগস্ট মাসের মধ্যে এসব বিলবোর্ড সরানো না হলে সেপ্টেম্বর থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘বিলবোর্ডে চেহারা দেখে জনগণ কখনো ভোট দেয় না’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভোট পেতে হলে জনগণের কাছে যেতে হবে এবং তাদের সঙ্গে ব্যবহার ভালো করতে হবে। উন্নয়নকাজ করতে হবে। তাহলেই জনগণ ভোট দিবে। এসব বিলবোর্ডে পাতি নেতা, সিকি নেতা, খেতা নেতা, চাঁদাবাজদেরও ছবি রয়েছে। বিলবোর্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবির পাশে কোনো চাঁদাবাজের ছবি থাকবে না।’
সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কথা উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরো বলেছেন, ‘এবার আমরা শক্ত হাতে হাল ধরেছি। রাস্তা এবং পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। এই চ্যালেঞ্জকে আমাদের মোকাবিলা করতেই হবে। দেশের স্বার্থে জনগণকে বাঁচাতে হবে।’
‘আগে হলো মানুষের জীবন, তারপরে জীবিকা। মানুষ বেঁচে না থাকলে জীবিকার সংস্থান করবে কীভাবে।’
‘ঈদের পরের দুর্ঘটনাগুলো চরম লজ্জার’ উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বিভিন্ন সময়ের যানজট ও দুর্ঘটনাগুলো ম্লান করে দিচ্ছে। এসব থেকে উত্তরণের জন্য আগে আমাদের যানজট ও দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে হবে।’
‘যদি আমরা রাস্তায় পাখির মতো মানুষ মরার মর্মান্তিক দৃশ্যপট বন্ধ করতে না পারি এবং যানজট যদি আমরা মানুষের সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে না পারি তাহলে আমাদের সব অর্জন বৃথা হয়ে যাবে। রাস্তায় পাখির মতো জনগণ মরে যাবে আর আমরা এটা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখব, তথাকথিত দায়িত্ব রপালন করর, এটা হয় না। সবাইকে মিনিংফুল দায়িত্ব পালন করতে হবে।’ যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
এ সময় সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ, সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেনসহ সড়ক ও জনপথের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম যথারীতি চলছে এবং একটি ট্র্যাকে চলে এসেছে। এখন আমাদের দরকার রাস্তা এবং পরিবহনকে শৃঙ্খলায় নিয়ে আনা। আজকে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল করা হচ্ছে। যানজট নিরসনে আরো দুটি মেট্রোরেলের প্রস্তাব নিয়ে আমি জাইকার কাছে জাপানে গিয়েছি। সেটাও আমরা পজিটিভ সাড়া পেয়েছি।’
‘এ ছাড়া ১৬ তারিখে এলিভেটেড ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ে ফিজিক্যাল ওয়ার্ক শুরু হতে যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ফ্লাইওভার নির্মাণ হয়েছে। এসব কিছু অর্জন বৃথা যাবে যদি আমরা রাস্তায় পাখির মতো মানুষ মরার মর্মান্তিক চিত্র এবং যানজট বন্ধ করতে না পারলে।’
সেতুমন্ত্রী আরো বলেন, অতীতে বারবার সিদ্ধান্ত হয়েছে কিন্তু পালন হয়নি। কিন্তু এবার কার্যকর হতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমাদের ৯৬টি জাতীয় মহাসড়কের মধ্যে ৯০ ভাগ দুর্ঘটনাপ্রবণ ২২টি রুটকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।