‘জিয়াউর রহমানের হাত ধরে রাজনীতিতে আসি’

‘পড়াশোনা শেষ করার পর শিক্ষকতায় যোগ দেই। আমি ছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। পরে রাজনীতিতে আসি। আর আমাকে রাজনীতিতে নিয়ে আসেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তাঁর হাত ধরেই আমার রাজনীতিতে আগমন।’
নিজের রাজনৈতিক জীবন শুরুর কথা এভাবেই এনটিভি অনলাইনকে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তিনি। ১৯৯৩ সালের পর থেকেই এই দায়িত্বে আছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে আসেন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের এজিএস, মহসিন হলের ভিপির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ সালে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগে। এরপর ছয় বছর লন্ডনে উচ্চতর পড়াশোনা করেন। সেখানে থাকার সময়ই দেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় তিনি সেখানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য ছাত্রদের সংগঠিত করে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭৫ সালে দেশে ফিরে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত জিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন।
খন্দকার মোশাররফ জানান, ১৯৭৯ সালে তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরামর্শে বিএনপির প্রথম ছাত্রবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কুমিল্লা উত্তর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও তিনি। ১৯৯১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন।
জিয়াউর রহমানের হাত ধরে রাজনীতিতে আসার পর কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চারবার সংসদ নির্বাচিত হন। দায়িত্ব পালন করেন বিদ্যুৎ ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
নিজে ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে উঠে এলেও এখনকার ছাত্র রাজনীতি নিয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নন এই বিএনপি নেতা। তিনি মনে করেন, ছাত্র রাজনীতির অতীত যে ঐতিহ্য আর গৌরব ছিল তা নষ্ট করা হয়েছে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, পাকিস্তান আমলেও ছাত্রদের মধ্যে গণতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চা ছিল। তাদের নির্বাচন করে ছাত্র সমাজের প্রতিনিধি হতে হয়েছে। এখন তা নেই। কত যুগ ধরে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। তাহলে ছাত্র রাজনীতি থেকে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে কীভাবে? সব দলেই একই অবস্থা। এখন আমরা মূল দল থেকে যাদের ভালো মনে করি তাদেরই নেতা বানিয়ে দেওয়া হয়।
এই অবস্থা থেকে কোনো একক দলের পক্ষে বেরিয়ে আসা সম্ভব না। এর জন্য সব দলের উদ্যোগ নিতে হবে বলে মনে করেন বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতা।