ছয় মাস আটকে রেখে ছাত্রীকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলায় কলেজছাত্রীকে পরিত্যক্ত বাড়িতে ছয় মাস ১৭ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
মামলার একমাত্র আসামি বাদল মিয়াকে (৩৪) গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় মির্জাপুর বাজার এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে বাদলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে সখিপুর থানায় মামলা করেন ছাত্রীর ভাই।
কলেজছাত্রীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এক ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। ছেলেটিকে বিয়ে করতে দূর সম্পর্কের চাচা বাদল মিয়ার সাহায্য নেয় সে। গত ১১ জানুয়ারি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে সকালের দিকে তাকে এলাকায় জঙ্গলের ভেতর একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে আসতে বলেন বাদল। কথামতো ওই বাড়িতে যায় সে। তাকে ঘরে আটকে রেখে সন্ধ্যায় ছেলেটিকে সঙ্গে আনার কথা বলে চলে যান বাদল। পরে সন্ধ্যার দিকে কিছু খাবার নিয়ে এসে তাকে পরদিন ওই ছেলে আসবে বলে জানানো হয়। রাতের খাবার খাওয়ার পর মেয়েটির আর কিছুই মনে নেই। পরের দিন সকালেও একই কথা বলে আসে।
ছাত্রী আরো জানায়, খাবারের সঙ্গে নেশাজাতীয় জিনিস মিশিয়ে তাকে অচেতন করে রাখা হতো। কথা বলা বা নড়াচড়া করার কোনো শক্তি হারিয়ে যায় একপর্যায়ে। এভাবে দিনের পর দিন চলতে থাকে। প্রথম দিকে নিয়মিত এলেও পরে কয়েকদিন পরপর খাবার দিতেন আর খাবারের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করতেন বাদল। সর্বশেষ পাঁচদিন না খেয়ে থাকার পর মেয়েটির কিছুটা চেতনা ফিরে আসে। সে মরিয়া হয়ে বাঁচার চেষ্টা করে। সর্বশেষ গত শনিবার কোনো রকমে জানালার বাইরে একটি হাত দিলে ছোট ছোট কয়েকটি ছেলে তা দেখতে পেয়ে ভূত ভূত বলে চিৎকার দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে উদ্ধার করে। স্বজনদের কাছে এ ঘটনা জানানোর পর টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জাকিয়া রশিদ (শাফি) জানান, ধর্ষণের শিকার ছাত্রী হাসপাতালে আসার পর তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে আরো বিস্তারিত জানা যাবে।
টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ অভিযুক্ত বাদল মিয়াকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।