প্রাইভেট পড়তে গিয়ে তিন স্কুলছাত্রী নিখোঁজ

বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় প্রাইভেট পড়তে গিয়ে তিন স্কুলছাত্রী নিখোঁজ হয়েছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে দুই ছাত্রীর অভিভাবক বানারীপাড়া থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
নিখোঁজ তিনজন হলো অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি মিস্ত্রি আঁখি ও স্বর্ণা আক্তার (১৩) এবং স্বর্ণার চাচাতো বোন ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার (১২)।
এদিকে বৃষ্টিকে খুঁজতে গিয়ে তার বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে বরিশালে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
বানারীপাড়া থানা ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চাখার ওয়াজেদ মেমোরিয়াল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ট শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া উপজেলার কুন্দিহার গ্রামের নির্মাণশ্রমিক মিজানুর রহমানের মেয়ে। সে উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের শাখারিয়া গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক মামা জামাল হোসেনের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। সোমবার বিকেলে সে কুন্দিহার গ্রামে বাবার বাড়িতে যায়। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় তার চাচাতো বোন অটোরিকশাচালক হেলাল খানের মেয়ে বানারীপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী স্বর্ণা আক্তারের সঙ্গে বন্দর বাজারসংলগ্ন প্রাইভেট শিক্ষক দোলা ম্যাডামের কাছে পড়তে যায়। সেখান থেকে তারা প্রাইভেট পড়ে ওই দিন বিকেল সাড়ে ৫টায় বেরিয়ে যায় বলে দোলা ম্যাডাম ওই শিক্ষার্থীর পরিবারকে জানান। কিন্তু আজ পর্যন্ত তারা বাড়ি ফেরেনি।
এ ঘটনায় আজ দুপুরে সুমাইয়ার বাবা মিজানুর রহমান ও স্বর্ণার মা সালমা বেগম বাদী হয়ে বানারীপাড়া থানায় পৃথক দুটি জিডি করেছেন।
অপরদিকে একই দিন দোলা ম্যাডামের কাছে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে বাড়ি ফেরেনি পৌর শহরের কুন্দিহার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের জেলে অমল মিস্ত্রীর মেয়ে ও বানারীপাড়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী বৃষ্টি মিস্ত্রী। ওই দিন বিকেলে বৃষ্টি বাড়িতে না ফেরায় তার বাবা অমল মিস্ত্রী মেয়েকে খুঁজতে বের হন। বানারীপাড়া-বরিশাল মহাসড়কে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে বানারীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। অবস্থার অবনতি হলে ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন।
এ ব্যাপারে বৃষ্টির মা অনিমা মিস্ত্রী বলেন, তাঁর মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে স্বামী অমল মিস্ত্রী গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন। তিনি তাঁর মেয়েকে খুঁজে পাওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
যোগাযোগ করা হলে বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে শিক্ষিকা দোলার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন, ওই তিন ছাত্রী তাঁর বাসায় এসে প্রাইভেট পড়ে। পড়া শেষ করে আবার বাসার উদ্দেশে রওনা দেয়। পরে জানতে পারেন তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।