তিস্তা চুক্তি সময়ের ব্যাপার : ওবায়দুল

তিস্তা চুক্তি সময়ের ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এই মন্তব্য করেন।
মুজিবনগর সরকার দিবস উপলক্ষে এই আলোচনার আয়োজন করা হয়। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ দেবনাথ প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যিনি (শেখ হাসিনা) গঙ্গা চুক্তি করেছেন, একটু অপেক্ষা করুন, ধৈর্য ধরুন। তিস্তাসহ অন্যান্য নদীর পানি বণ্টনের বিষয়টি এবার আরো এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে, চুক্তি সম্পাদন এখন কিছু সময়ের অপেক্ষা।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের জন্য ভারতের জনগণের নেতা নরেন্দ্র মোদি আমাদের দেশের জনগণের কথা ভেবে অনতিবিলম্বে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের যথাযথ উদ্যোগ নিবেন। এটা যত দ্রুত সম্ভব হবে, ততই মঙ্গল হবে।’
‘বাংলাদেশের জনগণের আবেগ, অনুভূতিকে বন্ধু ভারত সরকার মূল্য দেবে, সেটা আমরা আশা করি। এ চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের মাত্রা আরো নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে।’
আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে—বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক ভারতে সফরে যে ২২ টি সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি হয়েছে, তা কোনো গোপন বিষয় নয়, সবই প্রকাশ্য। এ চুক্তির লাইন বাই লাইন পড়ে দেখুন। আর এখানে কোথাও দেশবিক্রি, দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হয়েছে এর প্রমাণ দেখিয়ে জাবাব দিতে হবে। আর যদি তথ্য-উপাত্ত দিয়ে প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’
‘পার্বত্য শান্তি চুক্তির পরে বিএনপি বলেছিল ফেনী থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আর বাংলাদেশের থাকবে না, ভারতের অংশ হয়ে যাবে। এখন কি এটা ভারতের অংশ?’
‘তাদের অন্তর বিক্রি ইসলামাবাদে’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা দেশ বিক্রির কথা বলছেন, পাকিস্তানের কাছে তাদের বিবেক বিক্রি হয়েছে, তাদের অন্তর বিক্রি হয়েছে ইসলামাবাদের কাছে। কাজেই তারা এটা বলবেই। তারা ভারতবিদ্বেষ অপপ্রচার করে, প্রোপাগান্ডা করে তারা ভারত থেকে কিছুই আদায় করতে পারে নাই। আমাদের (আওয়ামী লীগ) পলিসি হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে আমাদের পাওনা আদায় করে নেওয়া। বৈরিতা করে কখনো পাওনা আদায় করা যায় না।’
‘নরেন্দ্র মোদি নির্বাচিত হওয়ার পর যারা আনন্দে ফুরফুরা ছিলেন, এখন কেন তাদের মনে বিষাদ। এখন কেন মনের জ্বালা? এখন কেন গাত্রদাহ।’
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে কাদের বলেন, যে দলের প্রতিষ্ঠাতা ৭ মার্চকে স্বাধীনতার সবুজ সংকেত বলে নিবন্ধ লিখেছেন, সেই দল এখন সাত মার্চ পালন করে না। ১৭ এপ্রিল গঠিত সরকারের অধীনে যিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন সেই দিনটিও তাঁর দল পালন করে না। এ দিনটির মধ্যেই কি তারা (বিএনপি) ভারতের গন্ধ খুঁজে পান? যারা সাত মার্চ, ১৭ এপ্রিল পালন করে না, তাদের বিবেক তো বিক্রি হয়ে গেছে পাকিস্তানের কাছে।
‘দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে যেকোনো ত্যাগ’
দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছেন উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার কোনো পিছু টান নেই। নেত্রী আমাকে বড় আশা করে দায়িত্ব দিয়েছেন। তাঁর মুখ আমাকে রক্ষা করতে হবে। আগামী নির্বাচনের জন্য জনগণের সামনে একটি কোন্দলমুক্ত, আধুনিক, স্মার্ট দল উপহার দিতে চাই। দলে ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে।’
‘সাম্প্রতিককালে দলের অনৈক্যর জন্য মূল্য দিতে হয়েছে। এটা দূর করতে সবার সহযোগিতা চাই।’