টানাহেঁচড়ার পর কাঠগড়ায় জাফরুল্লাহ

গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিট থেকে এক ঘণ্টার সাজা ভোগ করেন। ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের সাজার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ায় তাঁকে এ সাজাসহ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন ট্রাইব্যুনাল।
আজ বুধবার সকালে বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ এ রায় দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. মজিবর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. শাহীনুর ইসলাম।
রায় ঘোষণার পর ডা. জাফরুল্লাহকে সাজা ভোগ করতে বললে তিনি এর বিরুদ্ধে আবেদন করেন ট্রাইব্যুনালে। এর জবাবে আদালত বলেন, রায় স্থগিত করার এখতিয়ার ট্রাইব্যুনালের নেই। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন অনুযায়ী আদালতে অবমাননার কোনো রায়ের বিরুদ্ধে আপিল সুযোগ নেই বলে জানান টাইব্যুনাল। ডা. জাফরুল্লাহ ট্রাইব্যুনালকে বলেন, ‘আপনারা ক্ষমতার অপব্যহার করছেন।’ এরপর ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে পুলিশ তাঁর হাত ধরে টেনে কাঠগড়ায় নিতে চাইলে তিনি ঝটকা দিয়ে হাত সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় টানাহেঁচড়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে পুলিশ সরে যায়।
পরে ডা. জাফরুল্লাহ ১২টা ৪৯ মিনিটে নিজেই কাঠগড়ায় ওঠেন। সাজা সাজা ভোগ শুরু হলে সাংবাদিকদের এজলাস কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। বিচারপতিরাও এজলাস ছেড়ে চলে যান।
এ ব্যাপারে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আইনজীবী আকতার ইমাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ন্যায়বিচারের স্বার্থে আপিল বিভাগে তিনি আপিল করতে করবেন।
১০৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তির হাজিরা কিংবা কোনো দলিলপত্র উদঘাটন বা দাখিল করিবার আদেশসহ আপিল বিভাগের নিকট বিচারাধীন যে কোনো মামলা বা বিষয়ে সম্পূর্ণ ন্যায়বিচারের জন্য যেরূপ প্রয়োজনীয় হইতে পারে, উক্ত বিভাগ সেইরূপ নির্দেশ, আদেশ, ডিক্রি রা রিট জারি করিতে পারিবেন।’
এদিন বিবৃতিদাতা অপর ২২ বিশিষ্ট নাগরিককে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন ট্রাইব্যুনাল-২।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আরো ১৫ জনকে একই অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন ট্রাইব্যুনাল। আদালত অবমাননার দায়ে বার্গম্যানকে সাজা দেওয়ায় এর নিন্দা জানিয়ে গত বছর ২০ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে বিবৃতি দেন বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। এরপর ট্রাইব্যুনাল-২ তাঁদের কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চান।