কলেজছাত্রকে নির্যাতন, ওসিসহ চারজনের নামে মামলা

কলেজছাত্রকে শারীরিক নির্যাতন ও মিথ্যা চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি করে হয়রানির অভিযোগে ঝালকাঠির রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) চারজনের নামে মামলা করা হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্র মোহাম্মদ ইমরান হোসেন আদনান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় আসামিরা হলেন রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস, এসআই মো. নজরুল ইসলাম, এএসআই সঞ্জীবন বালা এবং রাজাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আবুল খায়ের মাহামুদ রাসেল।
বাদীর আইনজীবী খান শহিদুল ইসলাম বলেন, আদালতের বিচারক রুবাইয়া আমেনা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ওই দিনই এ বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে।
মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, রাজাপুরের বড়ইয়া ডিগ্রি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ ইমরান হোসেন আদনানকে গত ৭ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে থানায় ডেকে পাঠান ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস। থানায় গেলে তাঁকে চোর আখ্যা দেন ওসি। চুরির মামলায় জোর করে তাঁর স্বীকারোক্তি নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু রাজি না হওয়ায় ওসির কক্ষেই তাঁকে বেধরক মারধর করে পুলিশ। এ কাজে ওসিকে সহযোগিতা করেন থানার এসআই নজরুল ইসলাম ও এএসআই সঞ্জীবন বালা।
পুলিশের মারধরে একপর্যায় আদনান অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আজম তাঁকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। এ খবর ওসি জানতে পেরে তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও আবুল খায়ের মাহামুদ রাসেলকে হাত করে সেখানেই চিকিৎসা করাতে বলেন। পরে ওই চিকিৎসক আদনানকে বরিশাল না পাঠিয়ে সেখানেই ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেন। তাই আদনান সেখানে ভালো চিকিৎসা পাননি।
পরের দিন ৮ ডিসেম্বর স্থানীয় শিক্ষক ওয়ালিউর রহমানের বাসায় চুরির মামলায় সন্দেহভাজন আসামি দেখিয়ে পুলিশ তাঁকে আদালতে হাজির করে। আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেখানে তিনি পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি মুক্তি পান আদনান। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ২৪ জানুয়ারি থেকে টানা ছয়দিন বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় তাঁকে।
এ বিষয়ে রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, ‘আদনানকে আটক করার পর থেকেই তিনি অসুস্থতার অভিনয় করছিলেন। তাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করাও হয়নি, মারধরের প্রশ্নই ওঠে না। ঘটনার পর থেকেই তাঁর পরিবার মিথ্যা নাটক সাজিয়ে আমার বিরুদ্ধে বাজে মন্তব্য করছে এবং বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।’