দেশের বড় ব্যাধি হলো সন্ত্রাস ও মাদক : ডিআইজি

সরকারি নির্দেশনায় অপরাধ দমনে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
আজ রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের সভাকক্ষে রেঞ্জের ত্রৈমাসিক সভা শেষে চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি পুলিশের কর্মকর্তা, চৌকিদার ও দফাদারদের ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কার দেন।
সভায় ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক বলেন, দেশের জন্য বড় ব্যাধি হলো সন্ত্রাস ও মাদক। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ ও অপরাধী দমনে কাজ করছে পুলিশ। দেশবিরোধী জঙ্গি তৎপরতা ও ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনায় পুলিশ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে কাজ করছে।
সভায় ময়মনসিংহ রেঞ্জের অতিরিক্ত উপমহাপুলিশ পরিদর্শক মো. আক্কাস উদ্দিন ভুঞা, পুলিশ সুপার সৈয়দ হারুন অর রশিদ, শেরপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রফিকুল ইসলাম গনি, ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম, নেত্রকোনার পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব চৌধুরী, জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার রওনক নাসরিন ও রেঞ্চ অফিসের পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর এবং ২০১৬ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলাগুলোর অপরাধের পরিসংখ্যান এবং পুলিশের কাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এক বছরে রেঞ্জের চার জেলায় মামলা কমেছে ৬১২টি।
তবে শেরপুরে ৯৩টি মামলা বেশি হয়েছে, ময়মনসিংহে ২০১৫ সালের চেয়ে ১৬ সালে ডাকাতি, দস্যুতা, খুন, খুনসহ দাঙ্গা, চোরাচালান কমলেও বেড়েছে অপহরণ, পুলিশ আক্রান্ত, অস্ত্র, মাদকদ্রব্য সংক্রান্ত অপরাধ, নেত্রকোনায় শিশু নির্যাতন, পুলিশ আক্রান্ত, মাদকদ্রব্য, চোরাচালান বেড়েছে, জামালপুরে বেড়েছে খুন, পুলিশ আক্রান্ত, অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যের অপরাধ, শেরপুরে নারী নির্যাতন, অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও মাদকদ্রব্যের মামলা বেশি হয়েছে। জেলাগুলোতে উদ্ধার সংক্রান্ত অস্ত্রআইন, বিস্ফোরক দ্রব্য, মাদকদ্রব্য ও চোরাচালন মামলা বেশি হওয়াকে ইতিবাচক বলে দাবি ডিআইজির ।
প্রতিবেদনে ডাকাতি, দস্যুতা, খুন, দ্রুত বিচার, দাঙ্গা, খুনসহ দাঙ্গা, নারী ও শিশু নির্যাতন, অপহরণ, অস্ত্র আইনসহ ১৭টি অপরাধ বিষয়ে তথ্য দেওয়া হয়।
ওই তথ্যমতে, ময়মনসিংহে ২০১৫ সালে মোট মামলা ছিল তিন হাজার ৯৫৭টি। তবে ২০১৬ সালে তা কমে হয়েছে তিন হাজার ৬০৪টি। নেত্রকোনায় ১৫ সালে এক হাজার ৭১৯টি মামলার স্থলে ১৬ সালে তা হয় একহাজার ৬০০টি। জামালপুরে ১৫ সালে দুই হাজার ৪২৩টি মামলা হলেও পরের বছর ৪৭টি মামলা কম হয়। শেরপুরে ১৫ সালে মামলা হয় এক হাজার ২০৩টি, ১৬ সালে হয় এক হাজার ২৯৬টি। বেশি মামলা কমায় ময়মনসিংহ জেলা প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে নেত্রকোনা এবং তৃতীয় হয় জামালপুর।
এর আগে ময়মনসিংহ রেঞ্জে কর্মরত শ্রেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. সামিউল আলম, (দেওয়ানগঞ্জ) শ্রেষ্ঠ এএসআই মোশফিকুর রহমান (জামালপুর থানা), শ্রেষ্ঠ পুলিশ পরিদর্শক মো. কামরুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ এসআই মো. হাফিজুর রহমান, শ্রেষ্ঠ ট্রাফিক সার্জেন্ট পীযূষ রায় (ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানা), গোয়েন্দা পুলিশের শ্রেষ্ঠ এসআই তাহের উদ্দিন খান (নেত্রকোনা), শ্রেষ্ঠ এসআই আছমা খাতুন, চোরাচালান ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার (সরিষাবাড়ি থানা) শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশ অফিসার এসআই মো. কামরুল হাসান, শ্রেষ্ঠ ডিএসবি ওয়াচার কন্সটেবল আবুল মনসুর, শ্রেষ্ঠ কনস্টেবল মো. রফিকুল ইসলাম (শেরপুর), শ্রেষ্ঠ চৌকিদার আক্কাস আলী (ময়মনসিংহ), মো. সিদ্দিক মিয়া (নেত্রকোনা), শ্রেষ্ঠ দফাদার মো. ফজলুল হককে (জামালপুর) ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেন ডিআইজি।