৪ বছরের মধ্যে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা

রাজশাহীর তাপমাত্রার পারদ ক্রমাগত নিচেই নামছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় রাজশাহীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন রেকর্ড।
এর আগে শুক্রবার মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল ২২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রাজশাহী আবহাওয়া কার্যালয়ের উচ্চ পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম জানান, তাপমাত্রা আট থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। তবে চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে অবস্থান করলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। সে অনুযায়ী রাজশাহীতে এখন তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে।
আজ ভোর ৬টায় রাজশাহীতে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ। তবে সকাল সাড়ে ৮টায় বাতাসের আর্দ্রতা দাঁড়ায় ৬২ শতাংশে।
এদিকে হঠাৎ হাড়কাঁপানো তীব্র শীতে দুর্ভোগে পড়েছেন নানা বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষগুলো পড়েছেন চরম বিপাকে। প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে সাময়িকভাবে তাঁরা ঠান্ডা তাড়িয়ে উষ্ণতা খোঁজার চেষ্টা করছেন।
রাজশাহী আবহাওয়া কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান, ২০০৩ সালের ২৩ জানুয়ারি রাজশাহীতে ইতিহাসের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপরই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ শনিবারের ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে কনকনে শীত নিবারণের জন্য কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে রাজশাহীর নিম্ন-আয়ের মানুষগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন ফুটপাতের দোকানগুলোয়। আবার গরম কাপড় না পাওয়ায় শীতে আক্রান্ত হয়ে ছিন্নমূল অনেকে অসুস্থ হয়েও পড়ছেন। ফলে বাড়ছে শীতজনিত রোগের মাত্রা। হাসপাতালেও ভিড় বাড়ছে বিভিন্ন বয়সী রোগীদের।
রাজশাহী আবহাওয়া কার্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, কয়েকদিন আগের বৃষ্টির পর থেকেই তাপমাত্রার পারদ নিচে নামছে। এর সঙ্গে রাতে দেখা দিচ্ছে প্রচণ্ড কুয়াশা। এ অবস্থা চলতে পারে আরো কয়েকদিন। এরপর বাড়তে পারে তাপমাত্রা। তখন দুর্ভোগ কমবে মানুষের।
নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা হুসনে আরা খাতুন বলেন, ‘এত শীত, তাও একটাও গরম কাপড় কেউ দিয়ে গেল না। এখন কাপড় না পেলে কখন পাব। এই শীতে মানুষ সাহায্যের হাত না বাড়ালে আমরা কী দিয়ে শীত তাড়াব। তাই কখনো আগুন জ্বালাইয়ে আবার কখনো ঘরের মধ্যে বসে থেকে শীত তাড়ানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু গরম কাপড় গায়ে জড়াতে পারছি না।’
দড়িখরবোনা এলাকার রিকশাচালক মকলেছুর রহমান বলেন, শীতে ঘরের বাইরে যেতেই পারছি না। আবার রিকশা না চালালেও তো পেটের ভাত জোটে না। কী করব, তারপরও সকালে বাড়িতেই বসে থাকছি। দুপুরের দিকে বাড়ির বাইরে যাচ্ছি। এই শীতে গরম কাপড় না হলে বাড়ির বাইরে বের হওয়ার উপায় নেই। তাই বের হতে পারছি না।