ব্যানারে এমপির ছবি না থাকায় ছিঁড়ে ফেলল সমর্থকরা

শরীয়তপুরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অভিনন্দন জানিয়ে টাঙানো ব্যানারে সংসদ সদস্যের (এমপি) ছবি না থাকায় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে তাঁর সমর্থকরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
গতকাল শনিবার রাতে জেলার ডামুড্যা উপজেলার সিধলকুড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আহতদের ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ডামুড্যা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুর রব মুন্সী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদার বিজয়ী হন। এর পর থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল শুরু হয়।
গত শনিবার সকালে সিধলকুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নবনির্বাচিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদারকে অভিনন্দন জানিয়ে সিধলকুড়া বাজারসহ এর আশপাশে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত পাঁচটি ব্যানার ঢাঙিয়ে দেয়।
ব্যানারগুলোতে স্থানীয় সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের ছবি না থাকায় শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ডামুড্যা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বি এম সাত্তারের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন গিয়ে দুটি ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা আবার গিয়ে বাকি তিনটি ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। বিষয়টি টের পেয়ে খোকা সিকদারের সমর্থক বিল্লাল হাউইকার ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
সংঘর্ষে ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বোরহান মাদবর, বিল্লাল হাউইকার, ইঞ্জিল হাউইকার, ডামুড্যা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বি এম সাত্তার, বাদল বেপারী ও কামাল হোসেনসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
আহত বি এম সাত্তার, বাদল বেপারী ও কামাল হোসেনকে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে বি এম সাত্তার ও বাদল বেপারীকে ঢাকায় পাঠানো হয়। বাকিদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে ডামুড্যা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় মামুন হাউইকার ও ইদ্রিস হাউইকারকে আটক করে পুলিশ।
সিধলকুড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ইঞ্জিল হাউইকার বলেন, ‘আমরা নবনির্বাচিত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছাবেদুর রহমান খোকা সিকদারকে অভিনন্দন জানিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসংবলিত পাঁচটি ডিজিটাল ব্যানার টাঙিয়েছি। ব্যানারে স্থানীয় সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাকের ছবি না থাকায় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বিএম সাত্তার ও তাঁর লোকজন ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে ডামুড্যা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি বি এম সাত্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থ বলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি।
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় বি এম সাত্তার বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় একটি মামলা করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে। অপর পক্ষ এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। সহিংসতা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।