মৌলভীবাজারে পরিবহন ধর্মঘট চলছে

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে মৌলভীবাজার জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলছে।
গতকাল শুক্রবার শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পরিবহন ধর্মঘট পালন শেষে বিকেলে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে আজ শনিবার থেকে আগামীকাল রোববার পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলায় পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের দাবি মানা না হলে সিলেট বিভাগব্যাপী ধর্মঘটের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
ধর্মঘটের ফলে সকাল থেকে জেলার কোথাও বাস-ট্রাক-সিএনজি-ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করতে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট আগামী ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। তবে দাবি আদায় না হলে আবারও ধর্মঘটে যাবেন বলে জানিয়েছেন জেলার ব্যবসায়ী নেতারা।
গতকাল শুক্রবার পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা প্রশাসন শ্রমিকদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে ধর্মঘট প্রত্যাহারের আনুরোধ করেন। তবে নিজেদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে শ্রমিকরা।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ রোডে গাড়ি রাখা (পার্কিং) নিয়ে এক বিজিবি সদস্যের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের বাগবিতণ্ডা হয়। এ সময় স্থানীয় এক পরিবহন শ্রমিক ওই বিজিবি সদস্যকে লাঞ্ছিত করেন। এ খবর বিজিবির শ্রীমঙ্গল সদর দপ্তরে পৌঁছালে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় ব্যবসায়ী, পরিবহন শ্রমিক ও সাধারণ মানুষকে মারধর করেন।
পরে পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বিজিবি সদস্যদের ওপর পাল্টা হামলা চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় প্রায় ১০০ গাড়ি ও ৫০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে আটজন গুলিবিদ্ধসহ প্রায় ৫০ জন আহত হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ওইদিন রাতে ব্যবসায়ীরা শ্রীমঙ্গল চৌমুহনী চত্বরে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান এবং আজকে ধর্মঘটের ডাক দেন।
গতকাল শ্রীমঙ্গল শহরের বিভন্ন সড়কে ধর্মঘটের সমর্থনে পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ মিছিল ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান। বিকেলে শ্রীমঙ্গল চৌমোহনায় পরিবহন শ্রমিকরা সমাবেশ করেন। সেখানে নেতারা বিচার বিভাগীয় সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিকে প্রত্যাহার ও শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। সেখান থেকেই মৌলভীবাজার পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সঞ্জিত কুমার দেব এবং শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ লুৎফুর রহমানসহ অন্য নেতারা শনি ও রোববার সারা জেলায় দুই দিনের ধর্মঘটের ডাক দেন। দাবি না মানলে সিলেট বিভাগে কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
এ ঘটনার তদন্তে বিজিবি রিওজন পর্যায়ের চার সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে বিজিবির তদন্তকারী দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে।