ইসি ছাড়া কারো সঙ্গে সংলাপ হবে না : নাসিম

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শুধু নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেই সংলাপ হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেছেন, ‘২০১৯ সালে নির্বাচন হবে। এ নিয়ে সংলাপ হবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে। আর কারো সঙ্গে সংলাপ হবে না। সে নির্বাচনও শেখ হাসিনার অধীনেই হবে।’
আজ রোববার ‘পেট্রোলবোমা হামলায় মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা এবং সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে’ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি উদ্বোধন ঘোষণার সময় মোহাম্মদ নাসিম এসব কথা বলেন। এ দিন বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ১৪ দল। রাজধানীর ১৩টি স্থানে অংশ নেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম আরো বলেন, শান্তির পক্ষে সারা দেশে লাখ লাখ মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। খালেদা জিয়া নিজেই অবরোধ হয়ে আছেন। আমাদের শক্তি জনগণ। তাদের নিয়ে যুদ্ধ করব। সন্ত্রাসী বাহিনীকে পরাজিত করা হবে।
বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, মানববন্ধনটি গাবতলী থেকে টেকনিক্যাল হয়ে শ্যামলী, আসাদগেট, ধানমণ্ডি, রাসেল স্কয়ার, বসুন্ধরা মার্কেট, সোনারগাঁও হোটেল, শাহবাগমোড়, মৎস্যভবন, প্রেসক্লাব হয়ে পল্টন মোড়, গুলিস্তান মোড়, ইত্তেফাক মোড়, রাজধানী মর্কেট, সায়েদাবাদ থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, দেশে যে সংকট চলছে তা রাজনৈতিক সংকট নয়, আইনশৃঙ্খলার সংকট নয়। এটা বিচ্ছিন্নতাবাদ ও জঙ্গিবাদী সংকট। এই সংকট গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, শান্তির বিরুদ্ধে।
সাবেক রেলমন্ত্রী আরো বলেন, সাধারণ আইন-আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে এ সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়। দেশে এ ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী দমনে বিশেষ বাহিনী ও আইন তৈরি হয়েছে। আমাদের সে দিকটা লক্ষ রাখতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ বাহিনী তৈরি করে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করা হবে।
তথ্যমন্ত্রী এবং জাসদ (ইনু) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘খালেদা জিয়া পরাজিত হয়ে গণতন্ত্রের পথ পরিহার করে আগুন-সন্ত্রাসীদের দিয়ে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে হামলা করছেন। আগুন-সন্ত্রাসকে প্রশাসনিকভাবেই মোকাবিলা করা হবে। রাজনীতিতে সংবিধান, গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা সম্ভব। তবে তার আগে নাশকতা-জঙ্গিবাদ বন্ধ করতে হবে।’
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, সব হত্যার জন্য বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে দায় নিতে হবে। মানুষ হত্যার জন্য তাঁকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি এখন পোড়ামাটির নীতি গ্রহণ করেছেন। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন, তাঁকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি আরো বলেন, দানবের সাথে মানবের কোনো সংলাপ হতে পারে না। একটিই পথ আগুন-সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্থন করবে না হলে তাদের নিশ্চিহ্ন করা হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘বিএনপি নেত্রীর হরতাল-অবরোধে জনগণ সাড়া না দেওয়ায় এখন তাদের আগুনে পুড়িয়ে মারছে। তিনি এখন যা করছেন তা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। সন্ত্রাসীদের যেভাবে আইন দিয়ে দমন করা হয়, বিএনপিকেও দমন করা হবে। প্রশাসনকে বলব, আপনারা আরো কঠোর হন।’
মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়া, গণতান্ত্রী পার্টি নুরুল রহমান সেলিম, ডা. সহিদুল্লাহ শিকদার, তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, এম এ আউয়াল ও কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান।
এদিকে রাজধানীর রাসেল স্কোয়ারে মানববন্ধনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন,‘আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা মানবতাবিরোধী অপরাধ। প্রচলিত আইনে যদি এ অপরাধে মৃত্যুদণ্ড না হয়, তাহলে আইন সংশোধন করে জামিন অযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হোক। তিনি আরো বলেন , খালেদা জিয়া জঙ্গিবাদের নেত্রী। তাঁকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।
এখানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ উল আলম লেনিন, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন প্রমুখ বক্তব্য দেন।