ময়মনসিংহে কলেজছাত্রীসহ তিন বোনের ওপর হামলা

ময়মনসিংহে প্রকাশ্যে মধ্যযুগীয় কায়দায় দেশি অস্ত্র নিয়ে কলেজছাত্রীসহ এক পরিবারের তিন বোনের ওপর ঘণ্টাব্যাপী হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। শহরের ব্রাহ্মপল্লী বকুলতলা এলাকায় এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।
হামলাকারী একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে পুলিশ হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে নির্যাতিত পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
হামলার ঘটনায় ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন মাছ বিক্রেতা হাবিবুর রহমান।
ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার ওসি মো. কামরুল ইসলাম বলেন, হামলার বিষয়ে ঘটনার দিনই একটি মামলা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ১০ ডিসেম্বর বেলা দেড়টার দিকে সারোয়ার আলম খানের হুকুমে তাঁর লোকজন রামদা, লাঠি, লোহার রড ও ইট নিয়ে হাবিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলায় সময় সারোয়ার আলমের লোকজন হাবিবুর রহমানের মেয়ে ঝুমা আক্তার, রুনা রহমান ও কলেজছাত্রী বর্ণা রহমানকে বেধড়ক পেটায়। রামদার কোপে আহত হন ঝুমা। লাঠি দিয়ে পিটুনি এবং লাথি-কিল-ঘুষিতে গুরুতর আহত হন কলেজশিক্ষার্থী বর্ণা রহমান।
গুরুতর আহত ঝুমাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে পুলিশ তাঁর ভাই আলমকে নারী নির্যাতনের একটি মামলায় আটক করে।
হাবিবুর রহমান বলেন, ৬০ বছর ধরে চার শতক জমির মালিক তিনি। ওই জমি জোরপূর্বক দখল করতে না পেরে তাঁর নামে চারটি মামলা করেছে প্রতিপক্ষ। তবে সবকটিতেই প্রতিপক্ষ হেরেছে। জমির বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষ গত ১৯ নভেম্বর হবিবুর রহমানের ছেলে আলম ও তিন মেয়ের নামে নারী নির্যাতনের একটি মামলা করা হয়।
গত ১৯ নভেম্বরের মামলায় আমলকে হামলার দিন হাসপাতালে যাওয়ার সময় গ্রেপ্তার করা হলো কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে ময়মনসিংহ মডেল থানার সিনিয়র এএসপি সহাকারী পুলিশ মো. আল আমীন বলেন, আসামিদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
হাবিবুর রহমানের মেয়ে ঝুমা আক্তার বলেন, সারোয়ার আলমের সন্ত্রাসী বাহিনী পিস্তল নিয়ে আসে। ব্লেড দিয়ে তাঁরা চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং গলায় ছুরি ধরে জবাই করার ভয় দেখায়। পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন বাসায় এসে এবং মোবাইলে উল্টো তাঁর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ঝুমা আক্তার।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে এসআই আনোয়ার হোসেনকে কয়েকবার ফোন করা হলেও প্রতিবারই ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
হামলার ঘটনায় নিজের যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করে মামলার আসামি সারোয়ার আলম খান বলেন, তিনি জেলা যুবলীগের সদস্য ছিলেন। তাঁর বড় ভাইও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কমিশনার ছিলেন। তাঁরা অন্যায় করতে পারেন না । হাবিবুরের ওয়ারিশদের কাছ থেকে জমির একাংশ কিনেছেন বলে দাবি করে সারোয়ার আলম বলেন, ওই জমি দখলের অধিকার তাঁর আছে।