প্রাণনাশের হুমকি মেয়র সমর্থকদের, ৩৫ সাংবাদিকের জিডি

খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম ও তার অনুসারীরা প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ৩৫ জন সাংবাদিক।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর মডেল থানায় এ জিডি করেন সাংবাদিকরা। এর আগে বেলা ১১টার দিকে শহরের শাপলা চত্বরে আলোকচিত্র সাংবাদিক নীরব চৌধুরীকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন খাগড়াছড়ির সাংবাদিকরা।
জানা গেছে, মানববন্ধন শুরু হওয়ার পর পরই মেয়রের ৩০-৪০ জন অনুসারী লাঠিসোঁটা নিয়ে মানববন্ধনস্থলে এসে মাইক কেড়ে নেয় এবং পুলিশের উপস্থিতিতেই সাংবাদিকদের জবাই করার হুমকি দেয়। এ ছাড়া নানা ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিতে থাকে।
বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান ও পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলীকে জানান সাংবাদিকরা। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিকদের আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন জেলা প্রশাসক। পরে সাংবাদিকরা পরামর্শ অনুযায়ী সদর মডেল থানায় জিডি করেন।
এদিকে সাংবাদিক নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূইয়া বলেন, ‘রফিকুল আলম কর্তৃক বিএনপি নেতাকর্মী ও সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এমন অসংখ্য ঘটনার রেকর্ড রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। রফিকুল আলমের অপকর্ম এবং দুর্নীতি-অনিয়মের সংবাদ পরিবেশনের দায়ে এর আগেও একই কায়দায় সাংবাদিক এইচএম প্রফুল্ল ও প্রয়াত সাংবাদিক সুকুমার বড়–য়াকে নির্যাতন করেছিল।’
খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, একজন জনপ্রতিনিধির কাছে এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত।
নির্যাতনের পর জোর করে সাদা কাগজে সই নেওয়ার ঘটনায় মেয়র রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে আরেকটি জিডি করেছেন প্রথম আলোর আলোকচিত্র সাংবাদিক নীরব চৌধুরী।
আলোকচিত্র সাংবাদিক নীরব চৌধুরী জানান, গত রোববার সকালে পৌর সদরের রাজ্যমণি পাড়ায় অবৈধ বালু উত্তোলনের ছবি তুলতে গেলে তাঁকে ধরে পৌরসভায় নিয়ে যায় মেয়রের লোকজন। পৌরভবনেই তাঁর ওপর কয়েক দফা শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে সাদা কাগজে সই নিয়ে দুপুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। মেয়র নিজেই তাঁকে মারধর করেছেন জানিয়ে নীরব চৌধুরী বলেন, এতে তিনি মাথায়, বুকে এবং কানে আঘাত পেয়েছেন।
নিরাপত্তা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলী জানান, ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।