বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্য দিয়ে রিফাত হত্যা মামলার সব আসামির বিচার শুরু হলো।

এর আগে গত ১ জানুয়ারি রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সেদিন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ অভিযোগ গঠন করেন। মামলার সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য ৮ জানুয়ারি থেকে দিন ধার্য করেন আদালত।

এদিকে, অভিযোগ গঠন উপলক্ষে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৩ আসামিকে আজ আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ ছাড়া আদালতে উপস্থিত হয় জামিনে থাকা অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামি প্রিন্স মোল্লা। পরে আসামিদের উপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। অভিযোগ গঠন শেষে কারাগারে থাকা ১৩ আসামিকে ফের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

এদিকে, সকালে রিফাত হত্যা মামলার সংবাদ সংগ্রহের জন্য আদালত প্রাঙ্গণে দুই সংবাদকর্মীর ওপর চড়াও হয় আসামিদের স্বজনরা।

এ বিষয়ে রিফাত হত্যা মামলার বাদীপক্ষের মনোনীত আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু বলেন, রিফাত হত্যা মামলা অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন সম্পন্ন হয়েছে। ১৪ আসামির মধ্যে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ৩০২ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

এ ছাড়া আরেক অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামির বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্র, সহযোগিতা এবং আসামিদের পালাতে সহায়তা করার অভিযোগে ৩০২ ও ১২০(বি)১ এবং ২১২ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। আগামী ১৩ জানুয়ারি অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

এর আগে মামলার ধার্য তারিখ থাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে যশোর শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে থাকা ১৩ আসামিকে বরগুনার উদ্দেশে পাঠানো হয়। পুলিশ হেফাজতে আজ বুধবার সকালে আসামিরা বরগুনা পৌঁছায়। এরপর সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ।

গত ২৬ জুন বরগুনার সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে ২৪ জনকে আসামি করে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক—এ দুই ভাগে বিভক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন।

এ মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক। এ ছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক এক আসামি উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনে রয়েছেন। আর বাকি আসামিরা কারাগারে রয়েছেন।

বরগুনায় হত্যার শিকার রিফাত শরীফ। ফাইল ছবি