যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে ‘হত্যা’, শোকে মূর্ছা যাচ্ছেন মা-বাবা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে কলহের জেরে কোহিনূর খানম নিতু নামের এক গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর স্বামী জুয়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চরচারতলা গ্রামে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এর পর ওই গ্রামসহ আশপাশের গ্রাম থেকে শতশত লোকজন ঘটনাস্থলে ভিড় করছে।
নিহত কোহিনূর খানম নিতু ও অভিযুক্ত জুয়েল চরচারতলা গ্রামের বাসিন্দা।
আশুগঞ্জ থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পাঁচ বছর আগে পারিবারিকভাবে নিতু ও জুয়েলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নিতুকে যৌতুকের জন্য মারধর করতেন জুয়েল। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগে থাকত।
পুলিশের ধারণা, নিতু তাঁর বাবার কাছ থেকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে রাজি ছিলেন না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে নিতুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ ঘরে রেখে পালিয়ে যান জুয়েল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত জব্দ করে এবং সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
নিতুর ছোট বোন খাদিজা জান্নাত নিহা অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে জুয়েল তাঁর বোনকে মারধর করতেন। এ বিষয়টি প্রায়ই নিহাকে জানাতেন নিতু। নিহা বলেন, ‘আমার বোনকে যে খুন করেছে, সেই জুয়েলের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।’
এদিকে মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে নিতুর মা-বাবা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। এর মধ্যেই নিতুর মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মেয়ের খুনিকে দ্রুত আটক করা হোক, না হলে জুয়েল ফিরে এসে আমার পরিবারের বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।’
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রইছ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে জানতে পেরেছি, পারিবারিক কলহের জের ধরে জুয়েল তাঁর স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করেছেন। এ ঘটনায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জুয়েলের মা-বাবাসহ পাঁচজনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জুয়েলকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। আশা করছি দ্রুত ঘাতককে গ্রেপ্তার করতে পারব।’