ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মিরান উদ্দিন মাস্টার আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার সকালে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।

মিরান উদ্দিন এক মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বাদ জোহার জানাজা শেষে ঘিওর মুক্তিযোদ্ধা কবরস্থানে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়। 

মরহুম মিরান উদ্দিন মাস্টারের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ এম নাঈমুর রহমান দূর্জয়, ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আইরিন আক্তার, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম মহি উদ্দীন, মানিকগঞ্জ জজকোর্টের পিপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম আরজু, ঘিওর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান, ঘিওর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুল আজিজ, কমিউনিস্ট পার্টির মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কমরেড মজিবর রহমান মাস্টার, ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলমসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

মিরান উদ্দিন মাস্টার ১৯৩৪ সালের ২৮ আগস্ট জেলার দৌলতপুর উপজেলার ধামশ্বর ইউনিয়নের কাকনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শিক্ষক ভাষা আন্দোলনের পুরোধা প্রমথ নাথ নন্দীর নেতৃত্বে তেরশ্রীতে ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় এই আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন মিরান উদ্দিন।

শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি তেরশ্রী কে.এন ইনস্টিটিউশনে শিক্ষকতা করেছেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্কুল, কলেজসহ বহু প্রতিষ্ঠান গড়ার সঙ্গে তিনি নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ন্যাপ, কমিউনিস্ট পার্টি ও ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনীর একজন সম্মুখ যোদ্ধা ও সংগঠকও ছিলেন তিনি।

মিরান উদ্দিন মাস্টার শিক্ষা ও রাজনৈতিক জীবনে সান্নিধ্য পেয়েছেন কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তী, জীতেন ঘোষ, মণি সিংহ, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, প্রমথ নাথ নন্দী, ডা. এম এন নন্দীসহ অনেক জাতীয় নেতৃবৃন্দের।