মানিকগঞ্জে পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত, ৪ গ্রাম লকডাউন

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় এক পুলিশ সদস্যের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার খবর পেয়ে প্রশাসন ওই উপজেলার উথলী ইউনিয়নের চারটি গ্রামকে লকডাউন করেছে।
করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির নাম মহিউদ্দিন (৪৫)। তিনি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। বর্তমানে তাঁকে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাতেই জেলার শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের চারটি গ্রাম লকডাউন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সেইসঙ্গে মহিউদ্দিনের সংস্পর্শে আসা পরিবারের ২০ জন সদস্যকেও হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুজন পুলিশ সদস্যের শরীরে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় তাঁদের জেলা সদর হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পরীক্ষা করতে পাঠালে মহিউদ্দিনের শরীরে করোনায় আক্রান্তের ফলাফল পজেটিভ আসে। অপর পুলিশ সদস্যের শরীরে করোনার লক্ষণ পাওয়া যায়নি।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আরশাদ উল্লাহ বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার দুপুর ২টার পর শিবালয় থেকে মহিউদ্দিন নামে এক পুলিশ সদস্যকে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি দশদিন ধরে জ্বরে ভুগছেন এবং করোনাভাইরাসের উপসর্গও তাঁর মধ্যে বিদ্যমান। তিনি প্রথমে শিবালয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু কিছুতেই তাঁর জ্বর কমছিল না। শিবালয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তাঁর শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পরীক্ষা করতে পাঠিয়ে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করায় আমরা তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করেছি। রাতেই তাঁর শরীরের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আইইডিসিআর থেকে পজেটিভ এসেছে।’
অপরদিকে শিবালয় থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে আইসোলেশনে ভর্তি করা রোগী মহিউদ্দিন একজন পুলিশ সদস্য। তিনি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানায় কর্মরত। চলতি মাসের ১ তারিখে তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। পাঁচদিন পর ৬ এপ্রিল তাঁকে থানা কর্তৃপক্ষ ছুটি প্রদান করলে তিনি মানিকগঞ্জের শিবালয়ে পরিবারের কাছে অবস্থান করেন। প্রায় দশদিন জ্বর স্থায়ী এবং করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখায় শিবালয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তাঁর শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পরীক্ষা করতে পাঠায়। সেইসঙ্গে তাঁকে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাতে তাঁর শরীরে করোনা সংক্রমণ পজেটিভ ফলাফল আসায় প্রশাসন শিবালয় উপজেলার উথলী ইউনিয়নের চারটি গ্রামকে লকডাউন করেছে। সেইসঙ্গে তাঁর সংস্পর্শে আসা পরিবারের ২০ জন সদস্যকেও হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।