মানিকগঞ্জে শেষ হলো বিজয় মেলা

প্রতি বছর মানিকগঞ্জে সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ১৫ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদযাপিত হয়। গতকাল শুক্রবার শেষ দিনে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর হয়ে ওঠে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা।
মেলার আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হোক আজকের প্রজন্ম’ এই স্লোগানে ১৯৯১ সাল থেকে সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরই ১৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ জেলায় এই দিন থেকে মেলা শুরু হয়। এবারও গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন এই মেলার উদ্বোধন করেন।
এবার দুই শতাধিক দোকান বসে মেলায়। এসব দোকানে বিভিন্ন প্রসাধনীসামগ্রী, পোশাক, শিশুদের খেলনা ও খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। এ ছাড়া সার্কাস, পুতুল নাচ, জাদু প্রদর্শনী ও শিশুদের রেলগাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।
মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মঞ্চ। এতে বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি প্রতিদিনই দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সংগীত, নৃত্য, নাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে।
গতকাল শেষ দিনে শহরের শহীদ রফিক চত্বর থেকে মেলা প্রাঙ্গণ পর্যন্ত মানুষের ভিড় লক্ষ করা যায়। প্রচণ্ড শীতেও মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পা ফেলার জায়গা ছিল না। মেলায় ক্রেতাদের প্রয়োজনীয় ও শখের পণ্য কিনতে দেখা যায়।
মেলায় প্রসাধনীসামগ্রী বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। শুক্রবার ক্রেতাদের আগমন বেশি থাকায় বিক্রিও ভালো হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি করেছেন তিনি।
ঐতিহ্যবাহী এই মেলায় শুধু মানিকগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকা থেকেই নয়, ঢাকার সাভার, ধামরাই; টাঙ্গাইলের নাগরপুর, দেলদুয়ারসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা আসেন মেলায়।
মেলা উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানানো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে এই মেলার আয়োজন করা হয়।
গতকাল রাত ৯টার দিকে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে সমাপনী অনুষ্ঠান হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেলা উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার সচিব মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ ফটো, মানিকগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ঈসরাফিল হোসেনসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।