ভৈরবে পাদুকা কারখানা পরিদর্শনে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি দল

বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেমবনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল আজ শনিবার কিশোরগঞ্জের ভৈরবের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেশ কয়েকটি পাদুকা কারখানা পরিদর্শন করে। এ সময় প্রতিনিধি দলটি পাদুকা কারখানার পরিবেশ, উন্নতমানের পাদুকা উৎপাদন, শ্রমিকদের বিভিন্ন সুবিধা ইত্যাদি বিষয়ে মালিক-শ্রমিকদের সচেতনতামূলক পরামর্শ দেন।
পরে বিকেলে উপজেলার জামালপুর গ্রামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের (পপি) রিসোর্ট সেন্টারে পাদুকা উৎপাদনকারী মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করে।
পপির দাতা সংস্থা বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ও পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনায় সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্টের (এসইপি) আওতায় বিশ্ব ব্যাংকের এই প্রতিনিধি দলটি আজ শনিবার দিনব্যাপী বিভিন্ন পাদুকা কারখানা পরিদর্শন ও মতবিনিময় করে। বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেমবনের সঙ্গে এ সময় ছিলেন প্র্যাকটিস ম্যানেজার ক্রিস্টোফার ক্রেপিন, এসইপি প্রকল্পের টিটিএল ইয়ুনজু, বুসরা নিসাত ও জুলকার নাইন।
এ ছাড়াও পপির নির্বাহী পরিচালক মুর্শেদ আলম সরকার, পরিচালক মো. মশিউর রহমান, প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. বাবুল হোসেন, পিকেএসএফের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. জহির উদ্দিন প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, পপির সহযোগী সংস্থা এসইপি প্রকল্পটি কিশোরগঞ্জের পাদুকা উৎপাদনকারী ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোকে পরিবেশ সম্মত টেকসই উদ্যোগে উন্নীতকরণে ভৈরব, বাজিতপুর ও কুলিয়ারচর উপজেলায় কাজ করছে। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ও পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় পাদুকা সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা পাদুকা ব্যবসা সম্প্রসারণ ও পরিবেশগত উন্নয়নে কাজ করছে।
এ সময় ভৈরবে পাদুকা বিষয়ে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক পরামর্শসহ প্রকল্পটির বিভিন্ন কাজ তুলে বক্তব্য দেন পপি ও পিকেএসএফের কর্মকর্তারা।
রাজধানী শহর ঢাকার পরেই দেশের পাদুকাশিল্পের সবচেয়ে বেশি বিকাশ ঘটেছে নদীবন্দর ভৈরবে। অবিভক্ত ভারতের বিভক্তির পর তৎকালীন পূর্ববাংলার রাজধানী কলকাতা শহরে পাদুকাশিল্পে কাজ করা এখানকার কারিগররা নিজ এলাকায় এসে অল্প পরিসরে গড়ে তুলেছিল পাদুকাশিল্প কারখানা। তখন ভৈরব অঞ্চল ছিল তাঁতশিল্পের জন্য প্রসিদ্ধ।
১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের তাঁতশিল্পের বিপর্যয়ের ঢেউ ভৈরবেও লাগে। পর্যায়ক্রমে এখানকার তাঁতশিল্পগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কর্ম হারা তাঁতশিল্পের মালিকরা তাদের শ্রমিকদের নিয়ে গড়ে তুলেন পাদুকা কারখানা। যেগুলো বর্তমানে ফুলে-ফেঁপে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ হাজার কারখানায় রূপ নিয়েছে। যার মধ্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ রপ্তানিমুখী ২০টি বড়পরিসরের কারখানাও আছে। আর এসব কারখানায় এক লাখেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেন। নারী শ্রমিক কাজ করন ১৫ থেকে ২০ হাজার।