বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের পেয়ে বসেছে : আইনমন্ত্রী

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘নুসরাত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও এর দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির ঘটনা আমাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি যুগান্তকারী মাইলফলক হয়ে থাকবে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমাদের পেয়ে বসেছে। এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে নারী পুরুষের সমতা ফিরিয়ে এনে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।’
আজ রোববার রাজধানীর এফডিসিতে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে ‘নিপীড়নবিরোধী জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা’-এর গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘নুসরাত হত্যা মামলার রায়ের সবচেয়ে বড় মেসেজটি হচ্ছে কেউ যদি কোনো নারীর প্রতি সহিংসতা ঘটায় তাহলে তাকে সর্বোচ্চ সাজা গ্রহণে প্রস্তুত থাকতে হবে। সমাজ তাকে ক্ষমা করবে না। পক্ষপাতিত্বহীনভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রসিকিউশনসহ সংশ্লিষ্ট সকলে আইনি প্রক্রিয়া বলবৎ রেখে এই মামলা পরিচালনায় সহায়তা করায় একটা ন্যায়বিচার এসেছে। এই বিচারের মাধ্যমে সমাজকে সচেতন করে অসুস্থ মানসিকতা দূরের মাধ্যমে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করে নারী নিপীড়ন প্রতিরোধ করা যাবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ‘নুসরাত হত্যার দ্রুত বিচার নারীর প্রতি সহিংসতা কমিয়ে আনবে’ শীর্ষক চূড়ান্ত এই ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সমান নম্বর পেয়ে ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজ যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে। প্রতিযোগিতায় রানারআপ হয় ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরো বলেন, ‘আমাদের স্বাক্ষ্য আইন অনেক পুরোনো, সেটাকে আধুনিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। জাস্টিজ ডিলেইড ইজ জাস্টিজ ডিনাইড আবার জাস্টিজ হারিড ইজ জাস্টিজ বারিড দুটোই সত্য। বিচার বিভাগকে এই দুটি থিম লাইনের মধ্যে দিয়ে কাজ করতে হয়। আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন, এই স্বাধীনতায় সরকার হস্তক্ষেপ করে না।’
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘নুসরাত এক বীর প্রতীক। এক প্রতিবাদী মেয়ে। নুসরাতের মতো আর কোনো ঘটনা আমরা দেখতে চাই না।’ নুসরাতের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে সোনাগাজীর যে মাদ্রাসায় নুসরাত পড়তেন সে মাদ্রাসার নামকরণ নুসরাতের নামে এবং তাঁর মারা যাওয়ার দিনটিকে অর্থাৎ ১০ এপ্রিলকে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে ‘নিপীড়ন বিরোধী দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান তিনি।