বহুল প্রতীক্ষিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কম খরচে বিশেষায়িত চিকিৎসার লক্ষে দেশে এ ধরনের হাসপাতাল এটাই প্রথম। আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বিএসএমএমইউতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং আধুনিক অপারেশন থিয়েটারসহ হাসপাতালটি যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল বা চিকিৎসক দ্বারা রেফার করা সব গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা দেবে। প্রায় পাঁচ থেকে আট হাজার রোগী হাসপাতালের আউটডোর সেবা পাবেন। বিশেষায়িত হাসপাতালটি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে ইচ্ছুক অনেক বাংলাদেশির জন্য একটি বিকল্প হবে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাসপাতালে ৭৫০ শয্যা থাকবে। এ ছাড়াও ১৪টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার, একটি ১০০ শয্যার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট, একটি ১০০ শয্যার জরুরি ইউনিট, ছয়টি ভিভিআইপি এবং ২২টি ভিআইপি কেবিন এবং ২৫টি ডিলাক্স কেবিন থাকবে।

বিশেষায়িত সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন, জিন থেরাপি এবং রোবোটিক সার্জারি।

বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজনের জন্য ছয়টি মনোনীত কেন্দ্রও থাকবে, যেখানে প্রতিটি ওয়ার্ডে আটটি শয্যা থাকবে।

ছয়টি মনোনীত কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে বিশেষায়িত অটিজম, মাতৃকালীন যত্ন এবং শিশু যত্ন, জরুরি চিকিৎসা সেবা, হেপাটোবিলিয়ারি এবং গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি, কার্ডিওলজি ও সেরিব্রোভাসকুলার ডিজিজ এবং প্রাথমিক পর্যায়ে নেফ্রোলজি।

মাধ্যমিক পর্যায়ের কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্বাসযন্ত্রের ওষুধ, সাধারণ অস্ত্রোপচার, চক্ষুবিদ্যা, দন্তচিকিৎসা, চর্মরোগ বিদ্যা ও শারীরিক ওষুধ এবং পুনর্বাসন।

হাসপাতালে ৩০০ জন চিকিৎসকসহ প্রায় দেড় হাজার স্বাস্থ্যসেবা কর্মী রোগীদের পরিষেবা দেবেন।

এ লক্ষে এরই মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় কমপক্ষে ১২০ জন চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

হাসপাতালের প্রতিটি কর্মকান্ড একটি স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমের মাধ্যমে করা হবে এবং রোগীর তথ্য ১০০ বছরের জন্য রেকর্ড করা হবে।

প্রকল্পটি ২০১৬ সালে সাধারণ ও জটিল রোগের চিকিৎসার মাধ্যমে বিএসএমএমইউ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি, চিকিৎসা সেবা ও ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নের মাধ্যমে একটি ‘নিরাপত্তা নেট হাসপাতাল’ প্রতিষ্ঠা এবং পেশাদারদের দক্ষতা উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষে নেওয়া হয়েছিল।

প্রকল্পের ব্যয় এক হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে, যেখানে সরকার বরাদ্দ করেছে ৩৩০ কোটি টাকা এবং বিএসএমএমইউ ১৭০ কোটি টাকা।