বার্ন ইউনিটে ভর্তি ৩৭ মুসল্লি, কেউ শঙ্কামুক্ত নয়

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে ঢাকা মেডিক্যাল পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) বাচ্চু মিয়া গতকাল শুক্রবার রাতে জানান, নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় এ পর্যন্ত দগ্ধ ৩৭ জন ভর্তি হয়েছেন। তাদের সবার শরীরের মাথা থেকে পা পর্যন্ত দগ্ধ। চিকিৎসকরা চিকিৎসা শুরু করেছেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৭ জন জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে থাকা অন্যান্য চিকিৎসকরাও যোগ দিয়েছেন দগ্ধদের চিকিৎসায়। প্রায় সবার শরীরের ৩৫ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত দগ্ধ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে একাধিক মতামত রয়েছে। কেউ বলছেন, মসজিদের ভিটির নিচ থেকে গ্যাস বিস্ফোরণ হয়েছে। কেউ বলছেন, মসজিদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) যন্ত্র বিস্ফোরিত হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, গ্যাস পাইপ লাইনের লিকেজ থেকে মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে যায়। পরে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট বা অন্য কোনোভাবে অগ্নিস্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি হলে সেখানে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন লেগে যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গ্যাসের লিকেজ সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি গ্যাস কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি। স্থানীয়রা মনে করেন, গ্যাসের লিকেজ থেকে মসজিদের ভেতরে গ্যাস জমে এই বিস্ফোরণ হয়েছে। আগুন নেভাতে পানি দেওয়ার পরে ভেতরে গ্যাসের বুদবুদ হচ্ছে।
এদিকে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, এশার নামাজ পড়ার সময় একইসঙ্গে মসজিদের ছয়টি এসি বিস্ফোরণ ঘটে এবং আগুন লেগে যায়। এ সময় শতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করছিলেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত ও ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলো মসজিদের মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৫), মুসল্লি ইব্রাহিম (৪০) ও জুয়েল (৭)। পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তা (ডিআই ওয়ান) এসএম ইকবাল শনিবার সকালে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেন।