‘বঙ্গবন্ধুর লাশ পড়ে থাকল, এত নেতার কেউ গেল না, এখনো উত্তর পাইনি’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের মতো এত বড় সংগঠন এবং বহু নেতা থাকার পরও ৩২ নম্বরের বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর মরদেহ কেন পড়েছিল, কেনো তারা কেউ গেল না, সেই প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এত বড় একটা ঘটনা, বাংলাদেশে কি কোনো লোক জানতে পারল না? কেউ কোনো পদক্ষেপ নিল না? ওই লাশ পড়ে থাকল ৩২ নম্বরে? কেন? সে উত্তর আমি এখনও পাইনি। এত বড় সংগঠন, এত নেতা; কোথায় ছিল? মাঝে মাঝে আমার এটা জানতে ইচ্ছা করে। কেউ সাহসে ভর দিয়ে এগিয়ে আসতে পারল না?’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনাসভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ওই আলোচনাসভার আয়োজন করে। সভার সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতার ৪৮ বছরে অর্থনৈতিক মুক্তি, সুষম উন্নয়ন আর অগ্রগতি কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে তা উঠে আসে বিজয় দিবসের আলোচনায়। দেশের স্বাধীনতার জন্য বহু মানুষ আত্মত্যাগ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেই বাড়ির মুরুব্বিদের শান্তি কমিটিতে সদস্য বানিয়ে নিজেরা গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করেছে। ইতিহাস সত্যকেই টিকিয়ে রাখে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধ ছিল গেরিলা যুদ্ধ। এ গেরিলা যুদ্ধ চলতে হলে গেরিলাদের আগমন, তাদের শেল্টার দেওয়া, অস্ত্র রাখার জায়গা দেওয়ার কাজ ছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী করেছিল রাজাকার বাহিনী, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটি। অনেকেই বাড়ির মুরুব্বি একজনকে শান্তি কমিটির মেম্বার করে সামনে বসিয়ে রেখেছে, পেছনে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র রাখার জায়গা দিয়েছে, আশ্রয় দিয়েছে, আহত হলে চিকিৎসা করেছে, তথ্য সরবরাহ করেছে এভাবে প্রচুর মানুষ কিন্তু সহযোগিতা করেছে।’
দেশের মানুষের সেবা করাই নিজের প্রথম কাজ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ কামানো একটা নেশা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জীবনে কী পেলাম, পেলাম না সে চিন্তা না, মানুষের জন্য কিছু করতে পারলাম, দিতে পারলাম, কতটুকু করতে পারলাম সে চিন্তাই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের থাকতে হবে। অর্থসম্পদ কেউ কবরে নিয়ে যেতে পারে না। কিন্তু অর্থপ্রাপ্তি একটা নেশা। এটা একটা নেশার মত হয়ে যায়। মানুষ অন্ধের মত ছুটতে থাকে। তাতে পরিবার ধ্বংস হয়, ছেলেমেয়েরা বিপথে যায়, মাদকাসক্ত হয়, ভিন্ন পথে চলে যায় অথবা জঙ্গিতে যায়, হুঁশ থাকে না ছুটতেই থাকে। এই দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে যদি কেউ মুক্ত হতে পারে আর দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ হতে পারে তাহলে সে দেশের উন্নতি হয়।’
বাংলাদেশ সব সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থাকবে উল্লেখ করে করেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ সারাবিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে।’