প্রচার শান্তিপূর্ণ হলো, এবার ভোটের পালা

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার শেষ হলো রাত ১২টায়। স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী, ভোট শুরুর ৩২ ঘণ্টা আগে প্রচার কাজ বন্ধ করতে হবে। ফলে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করেছেন বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা।
১০ জানুয়ারি থেকে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার শুরু করেন। এরপর থেকে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা ভোটারদের দোরগোড়ায় ছুটছেন। কনকনে শীত বা বৃষ্টিতেও থেমে ছিল না প্রার্থীদের প্রচার। দলীয়ভাবে শুধু মেয়র পদে নির্বাচন হলেও প্রধান দুই রাজনৈতিক দল কাউন্সিলর পদেও দলীয় সমর্থন দিয়ে রাজনৈতিক মাঠ উত্তপ্ত করে তুলেছে।

তবে এই সময়ে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণের বেশকিছু অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে গেলেও তুলনামূলকভাবে শান্ত ছিল ভোটের মাঠ। নির্বাচনী প্রচারের সময় গাবতলীর আনন্দনগর এলাকায় বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের উপর হামলা, গোপীবাগে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, কয়েকটি স্থানে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ছাড়া বড় ধরনের কোনো অঘটন ঘটেনি।
ফলে বলা যেতে পারে, মোটামুটি শান্তই ছিলে ঢাকা সিটির ভোটের মাঠ। এখন ভোটররা অপেক্ষা করছেন ভোটের দিনটির জন্য। তাদের প্রত্যাশা, প্রচারের মতো ভোটের দিনটিও শান্ত থাকবে এবং সবাই নিরাপদে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন।

আচরণবিধি অনুযায়ী, কোনো নির্বাচনী এলাকার ভোটগ্রহণ শুরুর পূর্ববর্তী ৩২ ঘণ্টা, ভোটগ্রহণের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা এবং ভোটের দিন রাত ১২টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেউ কোনো জনসভা আহ্বান, অনুষ্ঠান বা তাতে যোগদান ও কোনো মিছিল কিংবা শোভাযাত্রা করতে বা তাতে অংশ নিতে পারবেন না। ওই সময়ে কোনো আক্রমণাত্মক কাজ বা বিশৃঙ্খলামূলক আচরণ করতে পারবেন না। ভোটার বা নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত বা দায়িত্বরত কোনো ব্যক্তিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা যাবে না। কোনো অস্ত্র বা শক্তিও প্রদর্শন বা ব্যবহার করতে পারবেন না কেউ। কেউ এ আইন ভঙ্গ করলে ন্যূনতম ছয় মাস ও অনধিক সাত বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচন আইন অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ শুরুর ৩২ ঘণ্টা আগে থেকে নির্বাচনী প্রচার বন্ধ থাকবে। এই সময়ের পর যদি কেউ প্রচারণা বা সভা করে তবে তাদের ছয় মাস থেকে সাত বছরের পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এমনকি জয়ের মিছিল, মশাল মিছিল, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাও করা যাবে না। আচরণবিধি ভঙ্গকারী নির্বাচিত হলেও প্রার্থিতা বাতিল করার ক্ষমতা রয়েছে ইসির।’

দুই সিটি নির্বাচনে ১৩ মেয়র প্রার্থীসহ কাউন্সিলর পদে প্রায় সাড়ে সাতশ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ৫৪টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৮টি সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) গঠিত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) রয়েছে ৭৫টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ২৫টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড। দুই সিটিতে ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে মোট ভোটার রয়েছেন ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ভোটার রয়েছেন ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন।