নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিচার দাবি

বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে সহপাঠী ও অভিভাবকরা। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির সামনে এই মানববন্ধন করা হয়।
বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করতে করতে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকে, ‘আমার ভাই মারা গেল, কিশোর আলো চুপ কেন?’, ‘কিশোর আলো কিশোর আলো, জবাব দাও জবাব দাও’।
সে সময় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ বিক্ষোভের স্থানে এসে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে আবার ক্যাম্পাসের ভেতরে নিয়ে যান।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গণেশ গোপাল বিশ্বাস জানান, ঢাকা রেসিডেসিয়াল মডেল কলেজের পেছনের সড়কে ৩০-৩৫ জন শিক্ষার্থী ২০ মিনিটের মতো দাঁড়িয়েছিল। তবে তারা দুপুরে পৌনে ১টার দিকে আবার ক্যাম্পাসের ভেতরে চলে যায়। কলেজের প্রিন্সিপাল তাদের হয়তো কোনো আশ্বাস দিয়েছেন। তবে কী আশ্বাস দিয়েছেন আমরা জানি না।’
ওসি বলেন, ‘আমরা সেখানে ছিলাম। তবে নিরাপত্তার দায়িত্বে। এখন সব কিছু স্বাভাবিক আছে। শিক্ষার্থীরাও ভেতরে অবস্থান করছে। তবে এই ঘটনায় রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের প্রিন্সিপাল তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে মূল ঘটনা জানা যাবে।’
এর আগে আজ সকালে গণেশ গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থী শুক্রবার কিশোর আলো নামের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। অনুষ্ঠান মঞ্চের পেছনে সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায়। ওই অনুষ্ঠান থেকে এক সাংবাদিক সন্ধ্যা ৬টার পর আমাদের ফোন করেন। তারপর আমরা গিয়ে লাশ উদ্ধার করি।’
ওসি আরো বলেন, ‘আমরা মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে লাশ পাই। সেখানে থাকা চিকিৎসকরা আমাদের জানান, ছাত্রটি বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছে। এরপর নাঈমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ পেতে আমাদের কাছে লিখিতভাবে অনুরোধ জানান। পরে আমরা লাশ হস্তান্তর করি তার বাবার কাছে।’
গতকাল শুক্রবার ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের মাঠে কিশোরদের মাসিক পত্রিকা কিশোর আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিল। বিকেলে অনুষ্ঠান মঞ্চের পেছনে নাইমুল আবরার বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত হয়।
শুক্রবার রাতে রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের মাঠে জানাজা শেষে নাইমুলের মরদেহ গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ধন্যপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। নাইমুল আবরার দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট। তার বাবা মজিবুর রহমান প্রবাসী। তবে তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন।
নাইমুলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম ফরহাদ। অধ্যক্ষ জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হক নাইমুলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি হাসপাতালে যান এবং নাইমুলের মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি এই পরিবারকে তাঁর নিজের এবং কিশোর আলোর পরিবার হিসেবে গ্রহণ করার কথা তাঁদের জানান। তিনি বলেন, নাইমুল আবরারকে চিরকাল স্মরণ করা হবে। এ জাতীয় দুর্ঘটনা কেন ঘটল, তা কঠোরভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।