দুই আইনজীবীর মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ বহাল

জঙ্গি সংগঠন শহীদ হামজা ব্রিগেডকে নাশকতার জন্য অর্থায়নের অভিযোগে দুই আইনজীবীকে দুই মামলার কার্যক্রমের ওপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে এ মামলা আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আইনজীবীরা হলেন হাসানুজ্জামান লিটন ও মাহফুজ চৌধুরী বাপন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। অন্যদিকে দুই আইনজীবীর পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন, সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারী উপজেলায় মাদ্রাসাতুল আবু বকর নামে একটি মাদ্রাসায় ‘জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে’ অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। গত ২১ ফেব্রুয়ারি বাঁশখালী উপজেলার লটমণি পাহাড়ে র্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব-৭-এর কর্মকর্তারা জানান, হাটহাজারী ও বাঁশখালী থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা নতুন জঙ্গি সংগঠন শহীদ হামজা ব্রিগেডের সদস্য। শহীদ হামজা ব্রিগেডের তিনটি সামরিক উইং আছে। এগুলো হলো গ্রিন, ব্লু ও হোয়াইট।
প্রত্যেক উইংয়ে সাতজন করে সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্য আছেন। ২০১৩ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রাম নগরের একটি রেস্তোরাঁয় সভা করে এই জঙ্গি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটান সংগঠকরা।
পরে ১৮ আগস্ট হামজা ব্রিগেডকে অর্থায়নের অভিযোগে ঢাকা থেকে ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা (৩৯), অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান লিটন (৩০) ও অ্যাডভোকেট মাহফুজ চৌধুরী বাপনকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা বিএনপি নেতা সাবেক হুইপ সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে।
পরবর্তী সময়ে চলতি বছরের ২০ আগস্ট হাটহাজারীর মামলায় ৩৩ আসামি ও বাঁশখালীর মামলায় ২৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনে আদেশ দেন চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল হালিম।
তবে পলাতক থাকায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানাসহ নয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এর পর অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন অ্যাডভোকেট হাসানুজ্জামান লিটন ও অ্যাডভোকেট মাহফুজ চৌধুরী বাপন। ১১ নভেম্বর হাইকোর্ট বিভাগ আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।