জেলহত্যা দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ রোববার সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান হিসেবে শ্রদ্ধা জানানোর পর দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
পরে একে একে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দ্বিতীয় কলঙ্কজনক অধ্যায় এই দিনটি।
১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর আগে এই চার জাতীয় নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
জাতি আজ রোববার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতাকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই কালো অধ্যায়টিকে স্মরণ করবে। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন ও দল সংগঠনের উদ্যোগে সারা দেশে পালিত হবে শোকাবহ এই দিবস।
এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সকাল ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সর্বত্র দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। এরপর কালো পতাকা উত্তোলন করে দলের নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করেন।
সকালে বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর বনানী কবরস্থানে জাতীয় চার নেতার কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়। সেখানে ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত করা হয়। একইভাবে রাজশাহীতে জাতীয় নেতা কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়া এদিন বিকেল ৩টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে (খামারবাড়ি, ফার্মগেট) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ঘৃণিত বিশ্বাসঘাতক সদস্য হিসেবে পরিচিত এবং তৎকালীন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোশতাক আহমদ এবং বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশীদ জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার এ পরিকল্পনা করেন। এ কাজের জন্য তাঁরা আগে ভাগে একটি ঘাতক দলও গঠন করে।
এ দলের প্রধান ছিলেন রিসালদার মুসলেহ উদ্দিন। তিনি ছিলেন ফারুকের সবচেয়ে আস্থাভাজন অফিসার। ১৫ আগস্ট শেখ মনির বাসভবনে যে ঘাতক দলটি হত্যাযঞ্জ চালায়, সেই দলটির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মুসলেহ উদ্দিন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর খালেদ মোশাররফ পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটানোর পরই কেন্দ্রীয় কারাগারে এই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়।

এনটিভি অনলাইন ডেস্ক